• শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ০১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

খুলনায় ময়ূর নদী ও ২৬টি খালের দখল উচ্ছেদ চলছে

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

খুলনায় ময়ূর নদী ও ২৬টি খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুলনা সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে রবিবার থেকে এ অভিযান শুরু করেছে। সোমবার দ্বিতীয় দিনের অভিযানে পাঁচটি ভবন ভাঙা হয়েছে। এর মধ্যে একটি চারতলা ভবনও রয়েছে। প্রশাসন কঠোরভাবেই এবারের উচ্ছেদ অভিযান মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ করছে।

কেসিসি’র এস্টেট অফিসার মো. নূরুজ্জামান তালুকদার আরও জানান, ‘সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযান চলে বিকেল তিনটা পর্যন্ত। অভিযানের দ্বিতীয় দিন গল্লামারি ব্রিজ থেকে নিরালার দিকে উচ্ছেদ অভিযান চলে। এ সময় চারতলা ভবন ভাঙার কাজ শুরু করতে গেলে ভবন মালিক নিজেই এটা অপসারণ করে নেবেন বলে তিনদিন সময় চান। তাকে ওই সময় দেওয়া হয়। এরপর মালিক নিজেই ভবন ভাঙার কাজ শুরু করেন। এছাড়াও আরও পাঁচটি ভবন ও স্থাপনা ভাঙচুর করা হয়েছে।’

গত রবিবার সকালে ময়ূর নদীর বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকা থেকে এ অভিযান শুরু হয়। প্রথম দিন দু’টি স্কেভেটরের মাধ্যমে ১৩টি অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা টিনসেড বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও সেমিপাকা কয়েকটি ঘর ভেঙে দেওয়া হয়। এসময় নদীর জায়গায় থাকা বহুতল ভবনের বর্ধিত অংশ ভবন মালিকদের নিজ উদ্যোগে ভেঙে ফেলতে দেখা যায়। রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযান দুপুরের বিরতি শেষে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ অভিযানে বুড়ো মৌলবীর দরগাহ থেকে ব্যাংক কলোনি পর্যন্ত একটি একতলা ভবন ও ১২টি ছোট-বড় স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানে কোনও বাধা দেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। 

উচ্ছেদ অভিযানের সময় সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী ও মাসুম বিল্লাহ, কাউন্সিলর ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে নদী ও খালের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হয়।

সিটি মেয়র বলেন, ‘দখল-বেদখলের কারণে পানি নিষ্কাশনের নদী ও খালগুলো সংকুচিত হয়ে পানি প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে অবৈধ দখল উচ্ছেদে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জরিপের আওতায় যতগুলো অবৈধ স্থাপনা আছে, সবগুলোই ভাঙা হবে।’

জানা যায়, উচ্ছেদ কার্যক্রমে গঠিত ৪টি কমিটি ময়ূর নদী ও ২৬টি খালে জরিপ চালিয়ে ৪৬০ জন দখলদারের তালিকা করে। নদী ও খাল দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ৩৮২টি।

জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ‘দখলদাররা অনেক সময় জনপ্রতিনিধিদের ভুল বুঝিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে বাধা সৃষ্টি করে। এ কারণে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বিত কমিটি করা হয়েছে। খুলনাকে জলাবদ্ধমুক্ত করতে এবার কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।’

এর আগে ২০১৬ সালে ময়ূর নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে খুলনা সিটি করপোরেশন। কিন্তু তাতেও নদতীটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে খুলনা মহানগরীকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে ময়ূর নদী ও ২৬টি খালের দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে সিটি করপোরেশন। কিন্তু অভিযান শুরুর পরপরই ওই বছরের ১১ জুলাই দুর্বৃত্তদের গুলিতে উচ্ছেদ কার্যক্রমে সক্রিয় সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শহীদ ইকবাল বিথার নিহত হন। এর ফলে ওই অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। ১০ বছর পর এবার ময়ূর নদী ও ২৬টি খালের দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ