• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

বিপদ যখন স্ক্র্যাব টাইফাস

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯  

রোগ লক্ষণ
 রোগীর প্রবল জ্বর আসবে।
 গাঁটে গাঁটে খুব ব্যথা হবে প্রবল।
 কাশি হতে পারে।
 শরীরের বিভিন্ন গ্ল্যান্ড ফুলে যায়।
 লিভার ও স্প্লিন বড় হতে পারে।
অন্যান্য লক্ষণ—
কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্ক্র্যাব টাইফাসের কামড়ে ত্বকে একটা আলসার তৈরি হয়। এই আলসারকে বলে ‘এসখার’। কিন্তু এই আলসার সাদা চামড়ার মানুষদের ক্ষেত্রে যতটা বোঝা যায়, কৃষ্ণাঙ্গ বা বাদামি চামড়ার মানুষদের ক্ষেত্রে সেভাবে বোঝায় যায় না।
আবার এও নয় যে স্ক্র্যাব টাইফাস হলে ওই আলসার দেখা দেবেই। ফলে আলসারের লক্ষণ দেখে স্ক্র্যাব টাইফাসের রোগ নির্ণয় করতে গেলে রোগ ধরা নাও পড়তে পারে! ফলে অসুখ জটিল আকার ধারণ করার আশঙ্কা থেকে যায়। আর একটা কথা মনে রাখতে হবে, পোকা কামড়ের সঙ্গে সঙ্গে লক্ষণ ফুটে বেরয় না। মানব শরীরে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি হতে কমবেশি ১০ দিন সময় লাগে।
রোগের জটিলতা
 সঠিক চিকিৎসা না হলে রোগীর ফুসফুস আক্রান্ত হয়ে নিউমোনাইটিস হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
 এনকেফেলাইটিস হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
 সমস্যা খুব বেশি হলে রোগী কানে শুনতে পান না।
প্রাণহানির কারণ
স্ক্র্যাব টাইফাসে প্রাণহানি ঘটার সবচাইতে বড় কারণ হল এআরডিএস। অর্থাৎ অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম। এমনকী এনকেফেলাইটিসের কারণেও রোগীর প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়ে যায়।
রোগ নির্ণয়ক পরীক্ষা
স্ক্র্যাব টাইফাসের সংক্রমণ হয়েছে কি না তা জানতে এলাইজা পদ্ধতিতে পরীক্ষা করাতে হয়। আইজিএম টেস্টের মাধ্যমে রোগীর দেহে স্ক্র্যাব টাইফাসের বিরুদ্ধে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না তা দেখা হয়।
চিকিৎসা
রোগ ধরা পড়ে যাওয়ার পর, রোগীকে উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করতে হয়। ঠিক সময়ে অ্যান্টিবায়োটিক দিলে রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন। তিন থেকে চার দিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে যান। অ্যান্টিবায়োটিক অবশ্য সাত দিনই খেতে হয়। অ্যান্টিবয়োটিকের নাম ডক্সিসাইক্লিন। তবে সন্তানসম্ভবা মহিলাদের ক্ষেত্রে ওষুধটি দেওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে অ্যাজিথ্রোমাইসিন দিয়েও চিকিৎসা করা যায়। ফলাফল একইরকম। সাধারণত স্ক্র্যাব টাইফাসের কারণে গর্ভস্থ ভ্রুণের ক্ষতি হয় না। তবে মায়ের চিকিৎসা সময়ে না হলে মায়ের প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়ে যায়। একইসঙ্গে গর্ভস্থ ভ্রুণেরও প্রাণ সংশয় হয়।
মনে রাখবেন
খালি পায়ে, জলা জঙ্গলে হাঁটলে পোকার কামড় খেতে হতে পারে। যদিও এখন কলকাতা শহরেও এই পোকার উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। তাই সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে ঘরের আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। নিয়মিত ঝোপঝাড় সাফ করান। ঘরের মেঝে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করুন।
আর হ্যাঁ, সারা বছর ধরেই এই রোগের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে সারা বছরই।
জ্বর হলে অবহেলা নয়
 কিছুক্ষেত্রে ডেঙ্গির জ্বর আর স্ক্র্যাব টাইফাসের জ্বর নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কিন্তু ডেঙ্গির জ্বর ৭ দিনের বেশি থাকে না। কিন্তু স্ক্র্যাব টাইফাসের জ্বর সাতদিনের বেশি সময় ধরে থাকতে পারে। তাই সন্দেহজনক জ্বর হলে স্ক্র্যাব টাইফাসের সংক্রমণের বিষয়টি উড়িয়ে দিলে চলবে না।
 ডেঙ্গু হোক বা স্ক্র্যাব টাইফাস, জ্বরের কারণ জানার জন্য রোগীর আইজিএম টেস্ট করিয়ে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ