• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে শিক্ষাসফরের বাস দুর্ঘটনায় নিহত ৩, আহত ৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

গোপালগঞ্জে পিকনিকের বাস দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে ৪৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ৪১ জনকে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং ৪ জনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানি উপজেলার বরাশুর নামক স্থানে যশোরগামী পিকনিকের বাসে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, তিনটি গাড়িতে করে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাকড়ী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া শিক্ষাসফরে করতে এসেছিলো। ফেরার পথে তাদের বহনকারী একটি বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। অন্যগাড়ীকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

কাশিয়ানী থানার এসআই দেওয়ান সাদেকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহতদের মধ্যে দু’জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বিদ্যুৎ বিশ্বাস (৫০)। তিনি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাকড়ী গ্রামের গোকুল চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে ও স্কুলের ল্যাব সহকারী সুদীপ্ত বিশ্বাস।

এছাড়া বাস চালক অজ্ঞাত (৫০)। তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হওয়ায় মরদেহ কাশিয়ানী পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

আহতদের মধ্যে আটজনের নাম পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেন নিরঞ্জন বিশ্বাস, সীমান্ত কুমার, কর্মচারী বাগচী, সুদীপ্ত, আনোয়ার হোসেন ও ওমর বিশ্বাস।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানাগেছে,  বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে টুঙ্গিপাড়া থেকে পিকনিক শেষে যশোরের বাঘারপাড়ার বাকড়ী গ্রামে ফিরছিল শিক্ষাসফরে আসা শিক্ষার্থীরা। পথিমধ্যে ঘটনাস্থলে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে বাসটি রাস্তার পাশে গাছের সাথে গিয়ে সজোরে ধাক্কায় লাগায়। ফলে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়।এসময় অন্ততঃ ৩৬ জন আহত হয়।

ফায়ার সার্ভিস, কাশিয়ানী থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ আহতদেরকে উদ্ধার করে কাশিয়ানী ১০০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে বিদ্যুত বিশ্বাসকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। রাত সাড়ে ১০টার পর অপর ব্যক্তি মারা যান।

বাঁকড়ী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে তিনটি বাস নিয়ে বাঁকড়ী স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পিকনিকে যান। ফেরার পথে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ইউনিয়নের বরাশুর নামক স্থানে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গাছের সাথে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই বাসে থাকা কমপক্ষে ৪৫ জন আহত হন। পরে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নড়াইল হয়ে আহতদের যশোর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক দুর্ঘটনায় আহত বিদ্যুৎ কুমার ও সুদীপ্ত বিশ্বাসকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি সকলের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে, হাসপাতালে গিয়ে হতাহতের সার্বিক খোঁজখবর নেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামানসহ রক্তদানের জন্য ছুটে আসেন যশোরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। রোগীর অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে হাসপাতালে ছুটে যান ডিউটি ও ছুটিতে থাকা ডাক্তার, নার্স ও সেবিকা ছাত্রীরা। হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়।

হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে ডিউটিরত সকল ডাক্তারদের ইতিমধ্যে ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি ৩০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক রোগীদের সেবায় নিয়োজিত আছেন। রোগীদের পর্যাপ্ত ওষুধ ও স্যালাইন হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আহত রোগীর জন্য রক্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজন পড়লে বেসরকারি ডাক্তাররাও তাদেরকে সহযোগিতা করবেন বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান জানান, আহতদের যে কোন প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ