• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

‘শেখের বেটি ঘর দিছে, তার জন্য দোয়া করি’

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২৩  

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদাহ গ্রামের সখিনা বেগম (৭০)। স্বামী মোহাম্মদ শেখ (৮০) মনিকদাহ খেয়া ঘাটে নৌকা চালাতেন। এখন প্যারালাইসিস হয়ে ঘরে পড়ে আছেন। ৩ মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়া এখন স্বামী নিয়ে তার সংসার। দিনমজুরি করলে পান তিনশ টাকা। তাই দিয়ে কোনো রকমে চালিয়ে নেন সংসার। থাকতেন একটি ঝুঁপড়ি ঘরে। 

প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেয়ে হাঁসি ফুটেছে সখিনা বেগমের মুখে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে খুব খুশি। এখন আর কষ্ট করতে হবে না। অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে। ঘর দেওয়ায় শেখের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। তার জন্য দোয়া করি সে যেন দীর্ঘায়ু হয়, আবার যেন প্রধানমন্ত্রী হয়।’ 


শুধু সখিনা বেগম নয় এমন আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ করেছে ২৪৭টি পরিবার। যাদের মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে।

বুধবার (৯ আগস্ট) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে আরও ২২ হাজার ১০১টি বাড়ি হস্তান্তর করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এরমধ‌্যে গোপালগঞ্জে ২৪৭টি পরিবার নতুন ঘর পেয়েছে। এ নিয়ে গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের মোট ৪ হাজার ৫২টি ঘর বিতরণ করা হলো। 

এ ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ জোবায়ের হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. নাজমুন নাহার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসটি) মো. গোলাম কবির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহাসিন উদ্দীন, সহকারী কমিশনার মো. আল মামুন, ফেরদৌস ওয়াহেদ, এসএম ইমাম রাজী টুলুসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

 

ঘর পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকদহ গ্রামের নজিরন বেগম (৪০) বলেন, ‘মা-বাবা আমাদের জন্য যা করতে পারেনি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা আমাদের জন্য করে দিয়েছেন। তিনি ঘর ও দুই শতাংশ জমি দিয়েছেন। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আল্লাহর কাছে তাঁর জন্য সব সময় দোয়া করবো।’

ঘর পেয়ে খুশি মানিকদহ গ্রামের জাহিদ মিয়া (৪৫)। তিনি বলেন, ‘নিজের ঘর ছিল না। তাই অন্যের জায়গায় থাকতাম। ভাড়া দিতে কষ্ট হত। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে স্বল্প আয়ে চলতে পারতাম না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘর দিয়েছেন। এখন মাথা গোজার জায়গা হয়েছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে পাকা ঘরে থাকতে পারবো। এটি আমার জন্য পরম পাওয়া। যা কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। এ জন্য আল্লাহ যেন তাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করেন।’

গৃহহীন ও ভূমিহীন জালাল মিয়া বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহসিন উদ্দীন, জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম আমাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছেন। অবশেষে আমাকে একটি ঘর দিয়ে বড় উপকার করেছেন। এজন্য জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রী ঘর দিয়েছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছা. নাজমুন নাহার বলেন, ‘জেলায় মোট গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা তালিকাভূক্ত করা হয়েছে ৪ হাজার ২৫২। এরমধ্যে ৪টি পর্যায়ে ৪ হাজার ১৭২টি ঘর বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৫২টি ঘর নির্মিত হয়েছে। এসব ঘর বিতরণ আজ বুধবার সম্পন্ন হয়েছে। ১২০টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এখন জেলায় তালিকাভূক্ত গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা মাত্র ৮০।’

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, ‘গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১৩০টি, মুকসুদপুরে ৪০টি, টুঙ্গিপাড়ায় ৩৭টি ও  কোটালীপাড়ায় ৪০টি সহ মোট ২৪৭টি ঘর আজ বুধবার গোপালগঞ্জ জেলায় বিতরণ করা হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে আমরা এ পর্যন্ত জেলার ৫ উপজেলায় ৪ হাজার ৫২ টি ঘর বিতরণ করেছি।’

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ