• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জে অন্ধ ভিক্ষুক পেল বিকল্প বিকল্প কর্মসংস্থানের ভ্যান

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

ইবাদ আলী খাঁ (৬৫)।  তিনি অন্ধ কন্ঠ শিল্পী  হিসেবে পরিচিত। তিনি ৪ সন্তানের জনক। সন্তানদের মধ্যে ২ জন ছেলে ও ২জন মেয়ে।  মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ২ ছেলে দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের আলাদা সংসার রয়েছে। ইবাদ আলী খাঁর বাড়ির জায়গা আছে। মাঠে কোন জমিজমা নেই। চরম দারিদ্রতার মধ্যে তাকে বসবাস করতে হয়। তাই  বাধ্য হয়ে শেষ বয়সে হাট, বাজার, মাঠে,ঘাটে ও বাটে হারমনিয়াম বাজিয়ে গান গেয়ে অর্থ উপার্জন করেন। এ অর্থদিয়েই তার সংসার চলে। বয়সের ভারে এখন তার হারমনিয়াম বহন করতে কষ্ট হয়। তারপরও জীবন জীবিকার প্রয়োজনে হাট বাজারে গান গেয়েই তাকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে হত। 
ইবাদ আলী খাঁর বাড়ি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী গ্রামে। তার পিতার নাম মরহুম মোঃ ছাবেদ আলী খাঁ।
অন্ধ কন্ঠশিল্পী ইবাদ আলী খাঁর দুঃখ দুর্দশার কথা জানতে পেরে  গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম তার পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে গঠিত সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান প্রকল্পের আওতায় অন্ধ কন্ঠ শিল্পীকে একটি ব্যাটারী চালিত ভ্যান প্রদান করা হয়েছে। 
গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম তার কাছে ভ্যানটি হস্তান্তর করেন। 
এ সময় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার  বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুদ্দোজা বদর, সমাজসেবা অধিদপ্তরের  গোপালগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপরিচালক মোঃ হারুন অর রশীদ, সহকারী পরিচালক মোঃ জুলফিকার আলী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার রন্টি দাস  প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অন্ধ কন্ঠশিল্পী ইবাদ আলী খাঁ বলেন, হারমনিয়াম নিয়ে হাট, বাজারে গান গেয়ে ভিক্ষা করতাম। বসয় হয়েছে। তাই এতে খুব কষ্ট হয়। এ আয় দিয়েই আমার সংসার চলত। জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বিষয়টি জানতে পেরে আমরা পাশে এসে দাঁিড়য়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তহবিল থেকে একটি ভ্যান দিয়েছেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে  আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এ ভ্যান আমার ছেলে মোঃ আলীকে ভাড়া দিয়ে দেব। ভ্যান ভাড়ার অর্জিত অর্থ থেকে আমি সংসার  চালাতে পারব। এ বৃদ্ধ বয়সে আর গান গেয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতে হবে না। 
অন্ধ কন্ঠশিল্পী ইবাদ আলী খাঁ ছেলে মোঃ আলী খাঁ বলেন, এ ভ্যান চালিয়ে আমি প্রতিদিন অন্তত ১ হাজার টাকা আয় করতে পারব। এখান থেকে আমার বাবাকে আমি প্রতিদিন ভ্যান ভাড়া বাবদ ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা প্রদান করব। আয়ের বাদবাকী টাকা দিয়ে ভ্যান মেরামত ও আমরা সংসারের পেছনে ব্যয় করব। সংসারের পেছনে ব্যয় করার পর বাড়তি টাকা সঞ্চয় করব। 
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, অমরা প্রধানমন্ত্রীর তহবিলের অর্থ থেকে এ ধরনের মানুষকে পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এরমধ্য দিয়ে এ শ্রেণির মানুষ যাতে ভালো থাকতে পারে, তার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
গোপালগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ হারুন অর রশীদ  বলেন, অন্ধ কন্ঠশিল্পী ইবাদ আলী খাঁসহ  ৬ জন ভিক্ষুকে আমরা পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এভাবে আমরা গোপালগঞ্জকে ভিক্ষুক মুক্ত করে তাদের হাতকে কর্মীর হাতে পরিণত করব। প্রধানমন্ত্রীর তহবিলের সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান প্রকল্পের আওতায় এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ