• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

কুড়িয়ে পাওয়া টাকা-পয়সা শরিয়তের দৃষ্টিতে করণীয় কী?

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২৩  

রাস্তা-ঘাটে ও পথে-গাড়িতে বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সা পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি ও চেষ্টার পরও যদি মালিক না পাওয়া যায়, তাহলে কী করতে হবে? আবার অনেকে মসজিদে দিয়ে দিতে বলে। মসজিদে দিয়ে দেওয়া কি সমাধান?

উক্ত প্রসঙ্গে উত্তর হলো- রাস্তাঘাটে কুড়িয়ে পাওয়া টাকা-পয়সার ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান হলো, যদি টাকার পরিমাণ এত কম হয় যে- মালিক তা অনুসন্ধান করবে না, তাহলে কোনো ফকির কাছে তা সদকা করে দেবে। আর যদি অনেক টাকা বা মূল্যবান কোনো বস্তু পাওয়া যায় এবং মালিক এর খোঁজে থাকবে বলে মনে হয়, তাহলে ওই স্থান ও আশপাশ এবং নিকটবর্তী জনসমাগমের স্থানে (যথা মসজিদের সামনে, বাজারে, স্টেশনে ইত্যাদিতে) প্রাপ্তির ঘোষণা দিতে থাকবে এবং প্রকৃত মালিক পাওয়া গেলে- তার কাছে হস্তান্তর করে দেবে।

জাইদ ইবনু খালিদ আল-জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, কোনো হারানো জিনিস প্রাপ্তি প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এক বছর না হওয়া পর্যন্ত এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি শনাক্তকারী কোনো লোক পাওয়া যায়, তাহলে তাকে তা ফেরত দাও। এর ব্যতিক্রম হলে, তুমি এর থলে ও থলের বন্ধনী সঠিকভাবে চিনে রাখো এবং এর মধ্যকার জিনিস গণনা করার পর কাজে ব্যবহার করো। তারপর মালিক এসে গেলে, তার কাছে এটা ফিরিয়ে দিও’। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২৫০৭; তিরমিজি, হাদিস: ১৩৭৩)

এর পরও যদি মালিক না পাওয়া যায়, মালিকের সন্ধান পাওয়া যাবে না বলে প্রবল ধারণা হয় তাহলে তা কোনো গরিব-মিসকিনকে সদকা করে দেবে। প্রাপক দরিদ্র হলে সে নিজেও তা রেখে দিতে পারবে। আর কুড়িয়ে পাওয়া টাকা মসজিদে দেওয়া যাবে না- এমন কথা ঠিক নয়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ২/২৮৯; আদ্দুররুল মুখতার: ৪/২৭৮; ফাতহুল কাদির: ২/২০৮; আলমুহিতুল বোরহানি: ৮/১৭১)

ঘোষণাটি এমন স্থানে হতে হবে, যেখানে ঘোষণা দিলে তা মালিকের কাছে পৌঁছবে বলে প্রবল ধারণা হয়। বিশেষ করে যেখানে পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে ঘোষণা দেওয়া উত্তম। কারণ, সাধারণত সম্পদ হারানোর পর সম্পদের মালিক সেখানেই খুঁজে থাকে, যেখানে সে তা হারায়। তারপর মানুষের সম্মিলনস্থলে যেমন- বাজার, মসজিদের দরজা; যখন মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বের হন, তবে মসজিদের ভেতরে ঘোষণা করা বৈধ নয়। কেননা মসজিদ ইবাদতের জন্য তৈরি হয়েছে; কুড়ানো বিষয়ের ঘোষণার জন্য নয়। এরপর যদি দৃঢ় বিশ্বাস হয় মালিক তা আর খুঁজতে আসবে না, তাহলে তা গরিবদের মাঝে সদকা করে দিবে। নিজে গরিব হলে প্রয়োজনে নিজেও ব্যবহার করতে পারবে। তবে যদি কোনো সময় মালিক এসে খুঁজে তাহলে তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ৬/৪৪৪, ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া ৯/১৯৩)

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ