• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জের প্রতিদিন ৩০ লাখ টাকার তাল শাঁস বিক্রি হচ্ছে

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৩  

গোপালগঞ্জ প্রতিদিন ৩০ লাখ তাল শাঁস বিক্রি হচ্ছে। তাল শাঁস বিক্রির সাথে জড়িতরা এখান থেকে প্রতিদিন অন্তত ৫লাখ  টাকা আয় করছেন। তাল গাছের মালিকরাও শাঁস বিক্রি করে ভালো টাকা পাচ্ছেন। গোপালগঞ্জ জেলায় উৎপাদিত তাল শাঁস প্রতিদিন ঢাকার মার্কেটে পৌঁছে যাচ্ছে। তাই তাল গাছের মালিক থেকে শুরু করে ঢাকা মার্কেটিংএর সাথে জড়িতরা গত বছরের তুলনয় এ বছর দ্বিগুণ টাকা আয় করছেন।
এ ব্যবসার সাথে জড়িত লিমন শেখ (৩৫) বলেন, প্রতিদিন গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলা থেকে ২০ ট্রাক তাল শাঁস ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু চালুর পর ফেরীতে কোন ভিড় নেই। তাই দিনের মধ্যেই তাল শাঁসবাহী ট্রাক ঢাকা পৌঁচ্ছে যাচ্ছে। ঢাকার আড়তে যাওয়ার সাথে সাথে তাল শাঁস বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
ওই ব্যবাসয়ী বলেন, গড়ে প্রতিটি তাল শাঁস আমরা গাছ মালিকের কাছ থেকে ২  টাকা দরে ক্রয় করি। গাছ থেকে তাল শাঁস নামাতে ও ঢাকা পৌঁছাতে তাল শাঁস প্রতি প্রায় পঞ্চাশ  পয়সা খরচ হয়ে যায়। আড়তে প্রতিটি তাল শাঁস গড়ে  ৩ টাকা দরে বিক্রি করি। একটি ট্রাকে  ৫০ হাজার  তাল শাঁস পাঠানো হয়। গত বছর যে তাল শাঁস ১ টাকা থেকে দেড় টাকা করে কিনেছি। এ বছর সেই তাল শাঁস ২ টাকা  দরে কিনছি। ঢাকায় সরাসরি তাল শাঁস পাঠাতে পেরে আমরা গাড়ি প্রতি ২৫ হাজার টাকা লাভ করতে পারছি। গত বছর এক ট্রাক তাল শাঁসে ১২ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। এ বছর দ্বিগুণ লাভ হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপাীনাথপুর গ্রামের তাল গাছের মালিক ছদর আলী (৫৫) বলেন, গত বছর ১০টি গাছের তাল শাঁস বিক্রি করে ৪ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। এ বছর ওই ১০ গাছের তাল শাঁস ৭ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর  দ্বিগুণ দামে তাল শাঁস বিক্রি করেছি।
কাশিয়ানী উপজেলার ব্যাসপুর গ্রামের তাল গাছ মালিক মৈয়ার আলী শেখ (৪৫) বলেন, আগে আমাদের এলাকায় তাল শাঁসের তেমন কদর ছিল না। এ বছর তাল শাঁসের কদর বেড়েছে। এ বছর ভালো দামে বিক্রি করতে পারছি। ক্রেতারা জানিয়েছে তারা তালশাঁস কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছে। তাই আমরা প্রতিটি তাল শাঁস গড়ে ২ টাকা দরে বিক্রি করতে পেরেছি। আমাদের এলাকায় তাল শাঁসের ব্যবসা এখন জমজমাট।
তাল শাঁস বিক্রেতা নজর আলী মুন্সি বলেন, ভ্যানে ঘুরে ঘুরে প্রতিটি তাল শাঁস ১০ টাকা দামে বিক্রি করছি। আমি বড় সাইজের তাল শাঁস ৫ টাকা দরে কিনছি।  প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ তাল শাঁস বিক্রি করতে পারছি। এতে অন্তত ১৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা লাভ হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ  খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার বলেন, মধু মাসের ফল তাল শাঁস। প্রচন্ড খরতাপে মানুষের পানির তৃষ্ণা বেড়ে যায়। তাল শাঁস খেলে প্রশান্তি মেলে। তাই তৃষ্ণাত্ব মানুষের কাছে তাল শাঁস খুবই প্রিয়।  গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলার মধ্যে  গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা, মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলায় বেশি তাল শাঁস উৎপাদিত হয়। এছাড়া টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলায়ও সামান্য তাল শাঁস হয়। প্রতিটি পূর্ণ বয়স্ক তাল গাছ থেকে ১৫০ থেকে ৪০০ তাল শাঁস পাওয়া যায়। এ বছর তাল শাঁসের ফলন ভালো। সেই সাথে তালগাছের মালিক তাল শাঁসের ভালো দাম পাচ্ছেন। গোপালগঞ্জ থেকে তাল শাঁস বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। তাল শাঁস বিক্রির সাথে জড়িতরা মোটা অংকের টাকা আয় করছেন ।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ