• বুধবার ১৯ জুন ২০২৪ ||

  • আষাঢ় ৪ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

ভারতীয় ঋণে পায়রায় হচ্ছে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৪ মে ২০১৯  

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নে এগিয়ে চলেছে দক্ষিণবঙ্গের স্বপ্নের প্রকল্প পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের নির্মাণ কাজ। পায়রা বন্দর বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে এখানকার চিত্র। ২০১৯ সালেই স্বল্প পরিসরে পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম চালু করতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে।

এর মধ্যে অন্যতম চ্যালেঞ্জ ১ হাজার ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি মাল্টিপারপাস  টার্মিনাল। ভারতীয় তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় এটা নির্মাণ করা হবে। টার্মিনালের মাধ্যমে পাথর, বালু, কন্টেইনার থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্য খালাস করা যাবে।

টার্মিনালে পণ্য খালাসের সুবিধায় একটি মোবাইল হারবার ক্রেন, ১৮টি ট্রাক্টর, ৩৬টি ট্রেইলার, পাঁচটি ফর্ক লিফট ও ছয়টি ছোট ইয়ার্ড ক্রেন ক্রয় করা হবে।

দীর্ঘ মাল্টিপারপাস টার্মিনালে মোট ব্যয় হবে ৫ হাজার ২১৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এরমধ্যে ভারতীয় ঋণ ৪ হাজার ৯৪৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং সরকারি অর্থায়ন ২৭৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। সেই হিসেবে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ মূলত ভারতীয় ঋণেই।

এই টার্মিনাল নির্মাণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান আরো উন্নত করা হবে। আমদানি-রফতানিযোগ্য পণ্য নিরাপদে বড় জাহাজে আনা-নেওয়া, পণ্যসমূহ প্রত্যাশিত স্তরে আপগ্রেডসহ পরিবহন ও ব্যবসায় ব্যয় কমানোই অন্যতম লক্ষ্য। এই টার্মিনাল নির্মাণের ফলে বন্দর খাতে বাংলাদেশের অবস্থান সারা বিশ্বে আরো উন্নত হবে।

‘পায়রা বন্দরে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। চলতি সময় থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মেয়াদেই এই টার্মিনাল নির্মাণ করবে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের যুগ্ম প্রধান (পরিকল্পনা) সাইফুর রহমান বলেন,ভারতীয় ঋণে পায়রা বন্দরে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে যাচ্ছি। এটা নির্মাণে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ২১৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। টার্মিনাল নির্মাণের মাধ্যমে বন্দর খাতে বাংলাদেশের অবস্থান আরো উন্নত হবে। পরিবহন ও ব্যবসায় ব্যয় প্রত্যাশিত পরিমাণে হ্রাস পাবে। এই বিশাল টার্মিনালের মাধ্যমে পাথর, বালু ও কন্টেইনার থেকে শুরু করে সব ধরণের পণ্য খালাস করা যাবে।

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, পায়রা বন্দরকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী এই তিন ভাগে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে আছে বহিঃনোঙ্গরে ক্লিংকার, সার ও অন্যান্য পণ্যবাহী জাহাজ আনা-নেয়ার মাধ্যমে দেশের অভ্যান্তরে পরিবহন করা। মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে ১০ মিটার গভীরতার চ্যানেল ড্রেজিং, একটা কন্টেইনার, একটি বাল্ক ও একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ। সর্বশেষ ২০২৩ সালের মধ্যে ১৬ মিটার ড্রাফটসহ বন্দরটি সম্পূর্ণরূপে পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তার আগেই এই মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ১২শ’ মিটার প্রয়োজনীয় সুবিধাসহ জেটি নির্মাণ করা হবে। মহাসড়ক, মাঝারি সেতু, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, ১০ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার লাইন নির্মাণ করা হবে। দুটি টাগবোট, পানি বিশুদ্ধিকরণ প্ল্যান্ট, নিরাপত্তা পোস্ট, গেস্ট গাউস, জ্বালানি স্টেশন, ক্যান্টিন নির্মাণ করা হবে প্রকল্পের আওতায়।

শুধু টার্মিনাল নয়, বন্দর ঘিরে সংযোগ সড়ক, আন্ধারমানিক নদীর উপর সেতু ও আনুষঙ্গিক সুবিধা তৈরি করবে সরকার। কারণ পায়রা সমুদ্র বন্দরের কাছে এখনও মাটি। প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ সড়কও ফোরলেন হবে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ