• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

মুন্সিগঞ্জের দুই স্কুলছাত্রী পালিয়ে ভারতে গিয়ে বিয়ে, অতঃপর...

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থেকে নিখোঁজ হওয়ার ৪ মাস পর ভারত থেকে দেশে ফিরেছে ২ স্কুলছাত্রী।দেশে আসার পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি শ্রীনগর থানা পুলিশ ওই দুই স্কুলছাত্রীকে তাদের অভিভাবকদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে।পুলিশ জানায়, উপজেলার উত্তর বালাশুর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক বাছারের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৪) ও প্রতিবেশী আবু কালাম মাদবরের মেয়ে কাকলি আক্তার গত ২ অক্টোবর সকাল ৬টার দিকে স্কুলের উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। তারা দু'জনই উপজেলার ভাগ্যকুল হরেন্দ্রলাল উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।এ ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় নিখোঁজ সুমাইয়ার পিতা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীনগর থানার এসআই আবুল কালাম ওই দুই ছাত্রীর বরাত দিয়ে জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সুমাইয়া ৬০০ ও কাকলি ১ হাজার ৭০০ টাকা নিয়ে গত বছরের ২ অক্টোবর ভারতে যাওয়ার উদ্দেশে ঘর ছাড়ে। তারা বালাশুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আরাম পরিবহনের বাসে গুলিস্তান এসে রিকশায় কমলাপুর যায়। সেখান থেকে ট্রেনে সিলেট। মাজারে রাতযাপন করে পরদিন সকালে জাফলং চলে আসে।জাফলংয়ের একটি চা দোকানীর কাছে সুমাইয়ার স্বর্ণের কানের দুল ও কাকলির নূপুর বিক্রি করে তারা ৫ হাজার টাকা পায়। পরে দোকানে বসে থাকা দালাল ধরে তারা জাফলং বর্ডার ক্রস করে ভারতে প্রবেশ করে। ভারতে প্রবেশ করে তারা শিলংয়ের গাড়িতে ওঠে।শিলংয়ে গিয়ে তারা নিজেদের কলকাতা থেকে বেড়াতে আসা দুই বোন পরিচয় দিয়ে রাতে হোটেলে রাতযাপন করতে চায়। কিন্তু কোনো আইডি কার্ড না থাকায় তারা হোটেলের রুম নিতে ব্যর্থ হয়। পরে মন্দিরে রাতযাপন করতে চাইলে মন্দিরের লোকজন তাদের অরবিন্দ আশ্রমে পাঠিয়ে দেয়া।সেখানে রাতযাপন করে পরদিন গৌহাটি গিয়ে ইয়াকুব নামের এক ট্রেনযাত্রীর সহায়তায় কলকাতার ট্রেনে উঠে। ৩ দিনের ট্রেন ভ্রমণের সময় তারা ইয়াকুবকে দেশ ছাড়ার বিষয়টি খুলে বলে।ভারতের গোয়া রাজ্যে কর্মরত শ্রমিক ইয়াকুব তাদের কলকাতা থেকে ২ হাজার কিলোমিটার দূরে গোয়া নিয়ে যায়। সেখানে সুমাইয়াকে বিয়ে করে ইয়াকুব সংসার শুরু করে।কাকলিও তাদের সঙ্গেই বসবাস করত। পরে কাকলির জন্য ইয়াকুব পাত্র খুঁজতে শুরু করে। একজনের সঙ্গে বিয়ের কথা পাকাপাকি হলেও শেষ পর্যন্ত বিয়ে হয়নি। কাকলির সঙ্গে পরে পরিচয় হয় পশ্চিমবঙ্গের রাকিব নামের এক যুবকের।রাকিবের সহায়তায় কাকলি গত ২১ জানুয়ারি দিনাজপুর এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর মধ্যে সুমাইয়া তার স্বামীর ফেসবুক আইডির মাধ্যমে তার মামার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ সময় সুমাইয়ার পরিবারও তাকে দেশে আসতে অনুরোধ করে। পরে সুমাইয়া তার স্বামী ইয়াকুবের সহায়তায় সিলেট এলাকা দিয়ে দেশে প্রবেশ করে।বিষয়টি শ্রীনগর থানা পুলিশের নজরে এলে তারা দুই স্কুলছাত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়।শ্রীনগর থানার এসআই আবুল কালাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে ঘোলাটে অবস্থায় ছিলাম। দেশের প্রতিটি থানায় ছবিসহ ম্যাসেজ দিয়েও কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। তাদের ফিরে আসায় নিখোঁজ রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ