• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

নাম উচ্চারণ না করেও বাংলাদেশের কথাই বললেন মরগ্যান!

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০১৯  

কোনো টিভি চ্যানেলে লাইভ করা যাবে না। ফেসবুক লাইভও দেয়া যাবে না। তবে ভিডিও করা যাবে। স্থির চিত্রও তোলা যাবে। প্রতি ম্যাচের আগে ও পরের প্রেস কনফারেন্সে এ কড়া নিয়ম মেনেই চলতে হয়েছে মিডিয়া কর্মীদের।

কাল ফাইনালের পর অফিসিয়াল প্রেস মিট শুরুর আগে আরও একটি শর্ত জুড়ে দেয়া হলো, ‘হ্যান্ড মাইকে জানিয়ে দেয়া হলো কেউ ভিডিও করতে পারবেন না। স্টিল ছবি তোলাও যাবে না।’

 

কিন্তু পরক্ষণে এমন এক দৃশ্য চোখে পড়লো যে তা ভিডিও না হোক, ছবি তোলা থেকে বিরত থাকতে চাইবে না কেউই। আইসিসির মিডিয়া অপারেশন্স কর্মীদের যত বাধা আর নিষেধই থাকুক না কেন, সে এক দূর্লভ দৃশ্য; প্রেস কনফারেন্সে ইংল্যান্ড অধিনায়ক মরগ্যান আসছেন বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে।

হলপ করে বলে দেয়া যায়, বাংলাদেশ বা ভারতের কোন অধিনায়ক হলে প্রেস কনফারেন্সে ট্রফি নিজ হাতে নিয়ে আসতেন না। তা বহন করার জন্য আরও দু’তিন জন আসতেন সাথে। কিন্তু সেটা করলেন না ইংলিশ অধিনায়ক মরগ্যান। তিনি নিজ হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে চলে আসলেন লর্ডসের কনফারেন্স হলে।

এমনকি সাথে থাকা মিডিয়া ম্যানেজারও ট্রফিতে হাত দেননি। সে এক দূর্লভ দৃশ্য। প্রথমবার বিশ্বকাপ জেতা, বিশ্বকাপ হাতে নেয়া গর্বিত মরগ্যান সেই বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে সংবাদ সন্মেলনে। তা দেখে ক্যামেরাবন্দী করতে না পারার আক্ষেপ থাকবে সারা জীবন। কাজেই আইসিসির মিডিয়ার লোকজন যাই বলুক, এ ছবি তোলার লোভ সামলানো যাবে না।

তাই মোবাইলের ক্যামেরা অপশনে গিয়ে দু’বার ফ্ল্যাশ করেও ফেললাম। তার পূর্বসুরিরা পারেননি। তিনি পারলেন। জাতিতে আইরিশ। ইংলিশ নন। তা নিয়ে মিডিয়া আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিস্তর কথা বার্তা; কিন্তু কাল লর্ডসের ফাইনাল শেষে কেউ তা নিয়ে একটি কথাও বললেন না।

কোনো সাংবাদিক এমন প্রশ্নও করলেন না। করলেন না এই কারণে যে, যুক্তরাজ্য আর ইংল্যান্ড হচ্ছে অভিবাসি মানুষজনে ভরা। আইরিশ, স্কটিশসহ ইউরোপের নানা দেশের মানুষের বসবাস। তাই কেউ ওসব প্রশ্নের ধার পাশ দিয়েও গেলেন না।

প্রেস কনফারেন্স হলো লম্বা চওড়া। অনেক কথাই উঠলো। শুনে অবাক হতে পারেন, কাল লর্ডসের ঐতিহাসিক ফাইনালের পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সন্মেলনে প্রাসঙ্গিক কারণেই উঠে আসলো ‘বাংলাদেশ’ প্রসঙ্গ।

ভাবছেন সাকিব ইস্যু বুঝি! বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকদে বড় অংশের ধারণা ছিল সাকিবই হয়ত হবেন বিশ্বকাপ সেরা পারফরমার। ৬০৬ রান আর সাথে ১১ উইকেট তো আর কম কৃতিত্ব নয়! আর কারো তা নেইও। তাই হয়ত সাকিবের হাতেই উঠবে বিশ্বকাপ সেরা পারফরমারের পুরষ্কার।

এমন ভাবনা আর আশায় গুড়েবালি পড়লো ফাইনাল শেষেই; ঘোষণা আসলো নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়মাসন আসর সেরা পারফরমার। কাজেই সাকিব ইস্যু নয়। তারপরও এমন একটি প্রসঙ্গ উঠেছিল, যেখানে বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত না হলেও বাংলাদেশ ঠিকই ছিল।

প্রশ্ন উঠলো, আচ্ছা! মরগ্যান আপনাদের এবারের বিশ্বকাপ প্রস্ততি, যাত্রা আর প্রাপ্তি নিয়ে কিছু বলুন? সে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মরগ্যান ফিরে গেলেন ২০১৫ সালে।

বলার অপেক্ষা রাখে না চার বছর আগে বাংলাদেশের কাছে হেরেই বিশ্বকাপ স্বপ্ন ভেঙ্গে গিয়েছিল ইংলিশদের। গ্রুপ পর্ব থেকে শূন্য হাতে বিদায়ও নিতে হয়েছিল। সেবার গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়া ইংল্যান্ড চার বছরে নিজেদের তিলে তিলে তৈরি করেছে।

সে প্রসঙ্গ টেনে মরগ্যান বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ না করেও বলে উঠলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা চার বছর আগে বিশ্বকাপ থেকে খালি হাতে ফিরে এসেছিলাম। আসলে সেই ব্যর্থতা ও না পারা থেকেই শুরু হয় আমাদের দিন বদলের চেষ্টা। সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার সম্ভাব্য সব রকম পরিকল্পনা নেয়া হয়। আমরা নিজেদের উন্নত করার সম্ভাব্য সব চেষ্টাই করেছি। তারই পুরস্কার এ বিশ্বকাপ বিজয়।’

বলার অপেক্ষা রাখে না ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ থেকে শূন্য হাতে ফেরার পর সেই ‘শোককে শক্তি’তে পরিণত করার চেষ্টা করেছে ইংলিশরা। ক্রিকেটারদের মানসিকতা, শরীরি অভিব্যক্তি, ব্যাটিং স্টাইল আর বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে আমূল পরিবর্তন আনার কাজটিও হয়েছে প্রচুর।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ