জীবন যাদের ‘ভাসমান’
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮
ঔপন্যাসিক নোমানে’র জলেস্বর উপন্যাসে পড়েছিলাম বেদে সম্প্রদায়ের জীবনের আখ্যান। এক ঘাট থেকে আরেক ঘাট। জলে ভাসা জীবনের নানা দৃশ্যপট সুচারুভাবে উপস্থাপন করেছিলেন লেখক।
এ বইটি পড়ার পর খুব কাছে গিয়ে বেদে জীবন দেখার ইচ্ছে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠছিল না। সম্প্রতি ইলিশের বাড়ি খ্যাত চাঁদপুর গিয়ে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল বেদে জীবন শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর)।
সেদিন বিকেল সাড়ে চারটা হাইমচর এলাকা থেকে ফিরে জেলা সদরের নতুন বাজার-পুরাতন বাজার সেতুর উপরে দাঁড়িয়ে ডাকাতিয়া নদীর জল ছুঁয়ে আসা শীতল বাতাস গায়ে লাগাচ্ছিলাম। ব্রিজের উপর থেকে নদীতে নৌকাগুলোকে খুব ছোট আকৃতির মনে হচ্ছিল। হঠাৎ করে চোখ আটকে যায় নদী পাশে সারিবদ্ধ কিছু নৌকা দেখে। নৌকার ভেতরে নারীরা ঘর গৃহস্তের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আর বাইরে নদীপাড়ে ছেলে মেয়েরা খেলায় মত্ত।বাংলানিউজের চাঁদপুরের স্থানীয় প্রতিনিধি মাসুদ আলম জানালেন এরা বেদে সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে এ নদী পাড়েই তাদের বসবাস।
দূর থেকে দেখে বেদের জীবনযাপন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল না। সিদ্ধান্ত নিলাম খুব কাছে থেকে দেখতে পারলে ধারণা পাওয়া যাবে ভাসমান জীবন ধারার ব্যাপারে। তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা আসছিল। তাই ওই পাড়াতে চলছিল ঘরে আলো দেওয়ার প্রস্তুতি। আফসার উদ্দিন, আবুল কাশেম আর জালাল নামের তিনজনের সঙ্গে কথা হলো। প্রায় আধঘণ্টার গল্প-আড্ডায় বেদে জীবনের না কথায়ই উঠে এলো। তিনজনই জানায় জন্ম থেকেই ভেসে বেড়াচ্ছে তারা, নৌকায় জন্ম, বিয়ে, সংসার এবং জলেই ওদের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে হবে।
স্থানীয়রা জানায়, চাঁদপুর নতুন বাজার ও পুরানবাজারে ডাকাতিয়া নদী ও মেঘনার পাড়ে, মতলব উত্তর-দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ ও হাইমচরে নৌকায় দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে বসবাস করছে প্রায় ২ শতাধিক বেদে পরিবার। যুগের স্রোতধারায় বর্তমানে বেদে পরিবারগুলো এখন পরিবার মাছ ব্যবসায়ী পরিচয় ধারণ করেছে। প্রকৃত বেদেদের যে কাজ যেমন বিভিন্ন তাবিজ দেওয়া, বিক্রি করা, সিঙ্গা দেওয়া, মাথায় টুকরিতে বিভিন্ন কাঁচের বা প্লাস্টিকের দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে বিক্রয় করা, এসব কাজ তারা এখন আর করেন না।
বেদে সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা বিষয় বেশ লক্ষণীয় আর তা হলো এসব পরিবারের নারীরাই সংসার চালান, আয়-রোজগার করা, ছেলে-মেয়েদের খোঁজখবর নেওয়া এবং রান্নাবান্না করে থাকেন। এক কথায় তারাই সংসারের সব ধরনের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ওরা মাছ শিকারের দক্ষ। এসব পরিবারের সদস্যদের যেহেতু কোনো ভূ-সম্পত্তি নেই, তাদের জন্ম ও মৃত্যু পানির ওপর নৌকাতেই হয়ে থাকে।বেদে সম্প্রদায় ধর্মে মুসলিম। হলেও স্থলভাগের মুসলমানের সঙ্গের তাদের জীবনের বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। তাদের ধর্মীয় বিষয় বিয়ে, তালাক, সাংসারিক জীবন পদ্ধতি নিয়ে রয়েছে মজার মজার গল্প। যা স্থলভাগের মুসলমান জীবন বোধের সঙ্গে মিল নেই।
ডাকাতিয়া পাড়ের বেধেপল্লিতে গিয়ে দেখা যায় নৌকার ভেতরেই চুলোয় চলছে রান্নাবান্না, সেখানেই খাওয়া-দাওয়া, ঘুম। এক নৌকাতেই ওদের পুরো সংসার। একজন বেদে শিশু নৌকাতেই জন্মগ্রহণ করে, নৌকাতেই বেড়ে উঠে। নৌকাতেই বিয়ে হয়। বিয়ের পর আলাদা আরেকটি নৌকায় গড়ে উঠে সংসার। যে নৌকাটি সংসার আবার সে নৌকাটিই জীবিকা উপার্জনের মাধ্যম।
কি এক জীবন তাদের। নদীর যে পানিতে সারতে হয় প্রাকৃতিক কাজ, সেখানেই হয় গোসল। এক অন্যরকম জলে ভাসা জীবন। বেদে সম্প্রদায় মারা যাওয়ার পর কবর দিতে হয় মাটিতে। সেটি তাদের জীবনের অন্যতম সংকট। তবে চাঁদপুরের বেদেরা মারা যাওয়ার পর শহরের সরকারি কবরস্থানেই তাদেরও দাফন করা হয়। রোদ-ঝড়-বৃষ্টি-শীতে নৌকাতেই কাটে তাদের ভাসমান জীবন। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, প্রবল জোয়ারের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ও কাটে এই নৌকাতেই।
আলামিন নামের ডাকাতিয়া নদীপাড়ের এক বেদে সর্দার জানান, নিদারুন কষ্টে কাটে তাদের জীবন। কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে তারা বেঁচে রয়েছে। সরকার যদি তাদেরকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে, তাহলে জীবনমান কিছুটা উন্নতি হতো।
নদীপাড়ে খেলাধুলায় মত্ত শিশুদের স্কুলে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে আলামিন বলেন, আশপাশে কোনো স্কুল নেই। বাচ্চারা স্কুলে যায় না নদীতে মাছ ধরে। নৌকায় যদি ভ্রাম্যমাণ কোনো স্কুল করা যেতে তাহলে তারাও পড়ত।
আলামিন সর্দার আরো জানান, এখন কেউ আর বেদেনীদের সিঙ্গা লাগায় না, দাঁতের পোকা ফালায় না। আগের মতো কেউ আর চাল, ডাল, শাক-সবজির বিনিময়ে মাছ আনতে নদীর ঘাটে যায় না। সাপ খেলা অন্যতম পেশা, কিন্তু এখনকার মানুষ আর সাপ খেলা দেখতে চায় না। তাই বেদেদের এখন আর পেট চলে না, নিরুপায় হয়ে বেদে পুরুষরা পরিবারের অভাব অনটন মেটাতে নৌকা থেকে ছেড়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছেন। বেদেদের মাঝে রয়েছে অনেক উপ-সম্প্রদায়: মালবৈদ্য, বাজিকর, শালদার, সওদাগর, গড়ালি।
চাঁদপুর জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রজত শুভ্র সরকার বলেন, চাঁদপুর শহরের মেঘনা ও ঢাকাতিয়া নদীর পাড়ে ১৩৫টি বেদে পরিবার রয়েছে। এছাড়া জেলার হাজীগঞ্জ, মতলব উত্তর-দক্ষিণ ও হাইমচরে রয়েছে আরো ১শ পরিবার বেদে। এ সম্প্রদায়ের জন্য ভাতা এবং নারীদের সেলাই, বিউটিফিকেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বেদে শিশুদেরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর জন্যও কাজ করছে সমাজসেবা।
তিনি আরো জানান, তারা যদি মূল স্রোতে আসে তাহলে সরকার তাদের জন্য করবে। সরকারের নির্দেশনা আছে তাদেরকে পুনর্বাসন করার। তারা যদি সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পে যায়, তাহলে তাদেরকে সেখানে ঘর দেওয়া হবে।
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ৫ কূটনৈতিক দলিল সই
- মানবসম্পদ উন্নয়নে উচ্চশিক্ষার বিকল্প নেই: এলজিআরডিমন্ত্রী
- প্রতীক্ষিত সুখবর দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর
- গণতন্ত্রে না ফিরলে বিলুপ্ত হবে বিএনপি: কাদের
- ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
- প্রতিবেশী থাইল্যান্ড গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার: শেখ হাসিনা
- থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
- টিসিবির জন্য কেনা হবে সাড়ে ৬১ কোটি টাকার মসুর ডাল
- সিঙ্গাপুর থেকে ২ কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার
- জিআই স্বীকৃতির সঙ্গে পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখতে হবে:শিল্পমন্ত্রী
- বাগেরহাটে বালু বোঝাই ট্রলির ধাক্কায় মা-ছেলে নিহত
- আম দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ
- হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়ছে আরও তিন দিন
- শপথ নিলেন নবনিযুক্ত আপিল বিভাগের তিন বিচারপতি
- বিশ্বনেতাদের প্রতি বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ বন্ধের আহবান প্রধানমন্ত্রীর
- গরমে মাথায় হাত মুরগি খামারির, আম চাষিরাও চিন্তায়
- ভারতের ৫২৭ খাদ্যপণ্যে বিষ : ইউরোপে নিষিদ্ধ
- স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত শনিবার
- মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলো ২৮৮ সেনা-বিজিপিকে
- দুবাইয়ের পর এবার মক্কা-মদিনায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস
- বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বেনজীর আহমেদের সম্পদের তথ্য চাইল দুদক
- হজ পারমিট দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব
- উপজেলা ভোট ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে
- বিএনপি আন্দোলনেব্যর্থ হয়ে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে:কাদের
- ১৫ বছরে আমাদের চাল আমদানি করতে হয়নি: এলজিআরডি মন্ত্রী
- এভিয়েশন শিল্পে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- বিএসইসির আদেশ জারি
৩ শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমতে পারবে না - বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ হবে দশ বিলিয়ন ডলার
- ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মে থেকেই অভিযান : মেয়র, ডিএসসিসি
- মডেল ঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ কৃষকের মধ্যে সাড়া
- গোপালগঞ্জে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ করলেন এসপ
- বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হটকারি সিদ্ধান্ত: হাছান মাহমুদ
- দুর্নীতি করব না, প্রশ্রয়ও দেব না: দীন মোহাম্মদ
- ইতিকাফের জন্য যেসব শর্ত মানতে হবে
- প্রতিবেশী দেশগুলোর অস্থিরতার প্রভাব বাংলাদেশে
- নূহ (আ.) এর নৌকা পাওয়া গেলো আরারাত পর্বতে!
- শেখ হাসিনা-জো বাইডেনের একান্তবৈঠকের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের
- মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- আজ ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস
- আজ পবিত্র লাইলাতুল কদর
- কত দিতে হলো মুক্তিপণ?
- মুকসুদপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ধাক্কা, প্রাণ গেল দুই বাইকারের
- মুকসুদপুরে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
- ঢাকায় মিলছে উটের দুধের চা
- গোপালগঞ্জে ভাসুরের বিরুদ্ধে গৃহবধূর উপর এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ
- এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ
- বিয়ের ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়ই মাহীর ‘পেশা’
- সেনেগালের বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশি হাফেজ আবু রায়হানের ‘বিশ্বজয়’
- সেই নারী কাউন্সিলর চামেলীকে দল থেকে বহিষ্কার
- টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে চীনা রাষ্ট্রদূতের শ্রদ্ধা