• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

কনের জন্য সোনার আংটি না আনায় বরকে বেঁধে মারধর

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০২২  

কনের জন্য সোনার আংটি না আনায় বরকে বেঁধে মারধর   প্রকাশিত: ৬:৪৫ অপরাহ্ণ, ১৩ আগস্ট ২০২২
ফাইল ছবি

কনের জন্য স্বর্ণের আংটি না আনায় বরপক্ষ মারধরের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মোট নয়জন আহত হয়েছে। শুক্রবার (১২ আগস্ট) ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসূতি ইউনিয়নের হিয়াবলদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৫ দিন আগে হিয়াবলদী গ্রামের শামিল শেখের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে স্বর্ণা আক্তারের (১৯) সঙ্গে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী একই উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের দাদপুর শাহজাহান শেখের (৩৪) বিয়ে হয়।

শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে কনেকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার আয়োজন ছিল। দুপুর আড়াইটার দিকে ৫০ জনের একটি বহর নিয়ে বরযাত্রী কনে পক্ষের বাড়িতে আসে। খাওয়া-দাওয়ার পর মেয়েকে বিয়ের সাজে সাজানোর কাজ শুরু হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে কনেপক্ষ বরপক্ষের কাছে স্বর্ণের আংটি চান। বরপক্ষ স্বর্ণের আংটি না দিয়ে একটি ইমিটেশনের আংটি দেন।

ফুলসূতি ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, সোনার পরিবর্তে ইমিটেশনের আংটি দেয়ায় বর ও কনেপক্ষ বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে বর শাহজাহান শেখকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে কনেপক্ষের লোকজন।

এ ঘটনার পর ফুলসূতি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য হাফিজুল মাতুব্বর এসে বরপক্ষকে সমঝোতার প্রস্তাব দিলে তাকে মারধর করে বরপক্ষ। এরপরই শুরু হয়ে যায় হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলা। কনের মা সেলিনা বেগম বলেন, ‘বিয়ের পর যৌতুক হিসেবে ছেলেপক্ষ আমাদের কাছে ৪ লাখ টাকা দাবি করে। আমাদের দিতে দেরি হওয়ায় তারা বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছিল। এ ছাড়া মোবাইল ফোনে আমার মেয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে তার বর। তা ছাড়া ছেলেটি (বর) মাদকাসক্ত, যা আমরা বিয়ের পরে টের পেয়েছি।’

বর শাহজাহান শেখ বলেন, “বিয়ের পর আমার স্ত্রীর সঙ্গে অপর এক পুরুষের একটি ছবি দেখি। এবিষয়টি তার পরিবারকে জানানো হলে তারা জানান মেয়েটি তার দুলাভাই। এজন্য মেয়েটিকে আমার ভাল চরিত্রের মনে হয়নি। এছাড়া আমার দুলাভাইয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে মেয়েপক্ষ। এজন্য এ বিয়ে থেকে আমার মন উঠে গিয়েছিল। তারপরও আমরা বিয়ের উদ্দেশ্যেই তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। এরপর তারা আমাকেসহ আমার সঙ্গের লোকদের পিটিয়েছে। এরপর আর এই সামাজিক সম্পর্ক টিকতে পারেনা। আমরা বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয়টি ভাবছি।”

ফুলসুতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন বলেন, “হিয়াবলদী গ্রামের ঘটনাটি একটি তুচ্ছ ব্যাপার থেকে শুরু হয়ে এখন বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়িয়েছে। গতকালই ওই বাড়িতে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য কাজী ডাকা হয়েছে বলে শুনেছি।”

নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা জ্যোতির্ময় চৌধুরী বলেন, এ “ঘটনায় নয়জন আহত হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ জন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন চারজন।

নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিল হোসেন বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত দেখতে পায়। এ ব্যাপারে কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ