• মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩১ ১৪৩১

  • || ০৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

পুলিশের কাছে বাবার ফাঁসির দাবি জানাল চার সন্তান

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

জয়নাল আবেদীন ও রোখসানা দম্পতির চার সন্তান। বড় সন্তানের বয়স ১০ বছর। ছোট সন্তানের বয়স আড়াই বছর। এই দম্পতি চার সন্তান নিয়ে বাস করতেন বাকলিয়া থানার তুলাতলী আলী মার্কেটের একটি ভাড়াবাসায়। দারিদ্র্যতার কারণে দাম্পত্যকলহ ছিল। সেই কলহের জের ধরে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর রাতে রোখসানার গলা কেটে হত্যা করে আত্মগোপনে চলে যান জয়নাল। 

এই পর কেটে যায় ১৬ মাস। বাকলিয়া থানা পুলিশ পলাতক খুনের আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি এতদিন। শেষ পর্যন্ত আজ রবিবার সকালে কুমিল্লা জেলার কান্দিরপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বাকলিয়া থানায় নিয়ে আসে। 

মা খুনের দায়ে অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তারের সংবাদ শুনে দুপুরে বাকলিয়া থানায় গিয়ে হাজির এই দম্পতির চার সন্তান। সেখানে হাজতে বাবাকে দেখে সন্তানের চোখে জ্বলে উঠে ক্ষোভের আগুন। এরপর চার ভাই-বোন যায় ওসি মো. নেজাম উদ্দিনের কক্ষে। সেখানে গিয়েই তারা ওসিকে উদ্দেশ করে বলে, মাকে জবাই করে হত্যা করেছে বাবা। আমরা বাবার ফাঁসি চাই।

সন্তানদের মুখে বাবার ফাঁসির দাবি মুখে প্রথমে বিস্মিত হন ওসি নেজাম উদ্দিন। পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে সন্তানদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, তোমরা অবশ্যই আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পাবে। খুনের দায় প্রমাণিত হলে আদালত তোমাকে বাবাকে ফাঁসির দণ্ড দিতে পারে। পুলিশ কর্মকর্তার মুখে এমন আশ্বাস পাওয়ার পর চার সন্তান ওসির কক্ষ থেকে বেরিয়ে খালার সঙ্গে চলে যায়। এরপর পুলিশ দ্রুত আসামিকে আদালতে সোপর্দ করে। আসামি জয়নাল আবেদীন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম খায়রুল আমীনের আদালতে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। 

বাকলিয়া থানার ওসি মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, এই দম্পতির অভাবের সংসার ছিল। চার সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতেন। জয়নাল ফুটপাতে ফল বিক্রি এবং রোখসানা গার্মেন্টে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করত। এরই মধ্যে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর রাতে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। তাদের বাসার পাশেই রোখাসার বড়বোন বাসা ভাড়া করে থাকতেন। ঝগড়ার সময় রোখাসানার বোন ও ভগ্নিপতি এসে ঝগড়া থামিয়ে যায়। কিন্তু ভোররাত সাড়ে ৪টার সময় জয়নাল তার স্ত্রী রোখাসানার গলা কেটে ছুরি রেখে পালিয়ে যায়। পরে সন্তানদের কান্নার শব্দ শুনে পাশের বাসা থেকে রোখসানার বোন লাভলী এসে দেখেন বোনের লাশ বাথরুমে গলা কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। এই ঘটনায় লাভলীর স্বামী মো. জলিল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

জয়নাল ঘটনার থেকে ১৬ মাস আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করে দেন। এরপর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় রবিবার দুপুরে। এরই মধ্যে সন্তানরা থানায় এসে বাবার ফাঁসির দাবি জানায়।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ