• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

বন্যায় ব্যাহত হবিগঞ্জের শিক্ষা কার্যক্রম

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০১৯  

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ জেলায় বন্যায় প্লাবিত এলাকাগুলোতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ক্লাসে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় অনেক অভিভাবক সন্তানদের যেতে দিচ্ছেন না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

 

সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ২৫টি সরকারি প্রাথমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয় প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা না হলেও এগুলোতে শিক্ষার্থী আসছে না বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার পারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজে সোনাইত্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দিঘলবাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাধাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কসবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও ইনাতগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এদিকে বাহুবল উপজেলার দীননাথ ইনস্টিটিউটসহ আরও বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নোয়াগর, পিরিজপুর, বদলপুর ও পাহাড়পুর এলাকার কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষগুলোতে পানি উঠে গেছে। যে কারণে বন্ধ রয়েছে পাঠদান।সোমবার বিকেলে বাহুবল উপজেলার দ্বীননাথ ইনস্টিটিউট ঘুরে দেখা যায়, দু’টি কক্ষে হাঁটু পানি জমে আছে। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে বিদ্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকে সেখানে পাওয়া যায়নি। নবীগঞ্জের সোনাইত্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি জনশূন্য। এলাকার রাস্তাঘাট প্লাবিত এবং বিদ্যালয়ে পানি উঠে যাওয়ায় ক্লাস করতে আসতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। একই অবস্থা ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়েরও। 

ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল আলম ইলাক জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যালয় প্রাঙ্গণসহ রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রটি এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্লাস করতে আসছে না শিক্ষার্থীরা।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হিলালপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়াসহ প্লাবিত হয়েছে বিদ্যালয় আঙিনা। তাই তার সন্তানদের দুর্ঘটনার ভয়ে বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না। এতে তার সন্তানদের লেখাপড়া পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পিরিজপুর গ্রামের কলেজছাত্র মনির হোসেন জানান, ছোট নৌকায় করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে হয়। যে পরিবারের নৌকা নেই ওই পরিবারের শিশুদের পানি ভেঙেই যেতে হচ্ছে। যে কারণে অনেকেই ভয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়েশা হক জানান, করাঙ্গী নদীর ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত এবং দ্বীননাথ ইনস্টিটিউটে পানি উঠে যাওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিকারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মর্জিনা খাতুন জানান, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠে যাওয়ার খবর এসেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলোতে পাঠদান বন্ধ করা হয়নি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে শিগগির এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ