• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

এইচএসসির প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক ‘উসকানি’: তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০২২  

এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার প্রশ্নে ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে ওঠা উসকানির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কে এম রব্বানীকে তদন্ত কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে। একই শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ও উপ-কলেজ পরিদর্শককে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

এ কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠাবে যশোর শিক্ষা বোর্ড।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

অধ্যাপক আহসান হাবীব বলেন, ‘ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্ন যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মডারেট করা হয়েছিল। এ কারণে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হবে। পাশাপাশি অপরাধের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে শোকজ করা হবে।’

এর আগে ওই প্রশ্নপত্র তৈরির সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের নামের তালিকা প্রকাশ করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।

এর আগে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলা প্রথমপত্রের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্রটি যশোর শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক প্রণীত। প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির সঙ্গে জড়িত প্রশ্ন তৈরি করা শিক্ষক হলেন- ঝিনাইদহের মহেশপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল।

এ প্রশ্নপত্র মডারেটের দায়িত্বে ছিলেন নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দীন শাওন, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুর রহমান, নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ এবং কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।

রোববার (৬ নভেম্বর) সারাদেশে এইচএসসি বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রশ্নপত্রের ১১ নম্বর প্রশ্নে বলা হয়েছে, ‘নেপাল ও গোপাল দুই ভাই। জমি নিয়ে বিরোধ তাদের দীর্ঘদিন। অনেক সালিস বিচার করেও কেউ তাদের বিরোধ মেটাতে পারেনি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এখন জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। ছোট ভাই নেপাল বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামে এক মুসলমানের কাছে ভিটের জমির এক অংশ বিক্রি করে। আব্দুল সেখানে বাড়ি বানিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কোরবানির ঈদে সে নেপালের বাড়ির সামনে গরু কোরবানি দেয়। এই ঘটনায় নেপালের মন ভেঙে যায়। কিছুদিন পর কাউকে কিছু না বলে জমি-জায়গা ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যায় সে।’

এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার বলেন, ‘বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে, প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় আসাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

তিনি বলেন, আমাদের সুস্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া থাকে প্রশ্ন তৈরির ক্ষেত্রে অবশ্যই যেন সাম্প্রদায়িক কোনোকিছু না থাকে। এটা খুবই দুঃখজনক যে, কোনো একজন প্রশ্নকর্তা হয়তো এ প্রশ্নটি করেছেন, যিনি মডারেট করেছেন তার দৃষ্টিও হয়তো কোনো কারণে এড়িয়ে গেছে। তিনিও হয়তো স্বাভাবিকভাবে বিষয়টি নিয়েছেন। আমরা চিহ্নিত করছি কে এ প্রশ্ন তৈরি করেছেন এবং কে মডারেট করেছেন। আমরা তাদের খুঁজে বের করে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ