• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

‘কনসার্ট করা যাবে না শুনে আইয়ুব বাচ্চু আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন’

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০১৯  

শুধু শিল্পী হিসেবে নন। ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু সম্পর্কের বাঁধন তৈরিতেও ছিলেন অদ্বিতীয়। সেই সময় তিনি তরুন সাংবাদিকদের সঙ্গে গড়ে তুলেছিলেন হৃদ্যতা। যে কারণে তার মৃত্যুর পর শিল্পীর পাশাপাশি কেঁদেছেন সাংবাদিকরাও। 

সুমন পাটোয়ারি এখন অভিনয়ে ব্যস্ত হলেও এক সময় সাংবাদিকতা করতেন। আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে ওঠাবসা ছিল নিয়মিত, সম্পর্কও ছিল বন্ধুর মতন।

সুমন পাটোয়ারি ‘সেই তুমি’ গানটির আদলে গ্লিটজের সঙ্গে স্মৃতিচারণ করলেন এই শিল্পীকে নিয়ে। হাসিমুখে জানালেন – কেমন ছিল তাদের রুপালি দিনগুলি!

যেমন ছিলেন ‘সেই তুমি’ আইয়ুব বাচ্চু

কাছের মানুষ বলতে যা বোঝায়, তেমনই ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু- এভাবেই শুরু করলেন সুমন পাটওয়ারী। বলেন, “বাচ্চু ভাইয়ের মধ্যে অদ্ভুদ একটা ক্ষমতা ছিল। তিনি সবাইকে আপন করে নিতে পারতেন। তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক সেই পঁচিশ বছরের।” কোনও ভাবেই সেই সম্পর্ককে প্রকাশ করা যাবে না শব্দে। জীবনের প্রথম দিন থেকে দেখার সময় থেকে বাকী দিনগুলোতে একই রকম ছিল।  

“একই আজেবোজে প্রশ্ন করেছি সাক্ষাৎকারের সময়, সব প্রশ্নের উত্তর হাসিমুখে দিয়ে গেছেন।” বলে একটু থেকে হেসে সুমন যোগ করলেন, “এমনই ম্যাজিশিয়ান ছিলেন বাচ্চু ভাই।” তার কাছে আব্দারও করা যেত যখন তখন, কখনো বড় ভাই কখনো বন্ধু রূপে তা মেনে নিতেন আইয়ুব বাচ্চু। 

‘কেমন করে এতো অচেনা হলে তুমি’

শিল্পী বলেই হয়তো অভিমানী ছিলেন বেশি। সুমন জানালেন, “একবার ঘোষণা দেওয়া হলো কনসার্ট করা যাবে না। আর বাচ্চু ভাই বললেন, তিনি আত্মহত্যা করবেন!” 

শিল্পীর অনুরাগে ভালোবাসায় এই অভিমান এখন মনে করে সুমন হাসলেও সঙ্গীতের প্রতি একজনের ভালোবাসার দাগ যে তার মনে কেটে আছে, সেটা বলাই বাহুল্য!

তার ছেলেমানুষী ব্যাপারটা ছিল স্পষ্ট। সুমন জানালেন, একবার বাচ্চু ভাই আমাকে ফেইসবুক থেকে ডিলেট করে দিলেন। কারণ তার মনে হলো আমি আর তার আপন নই।”

এরপরে অবশ্য নিয়াজ আহমেদ অংশু যখন আইয়ুব বাচ্চুকে বলেন বিষয়টা। তিনি নিজেই সুমনকে বলেন, “আমরা কী বন্ধু হতে পারি?”

এর উত্তরে সুমন বলেন, “বাচ্চু ভাই এই ঢং‘য়ের মানে নেই। 

তবে সুমন এও বলেন, “বাচ্চু ভাইয়ের সব অভিমানকে আসলে আমরা সম্মানও দিতে পারিনি।” শেষ দিনে একারণেই হয়তো যোগাযোগ কমে গিয়েছিল জানিয়ে নিজের উপরেই যেন অভিমান করলেন সুমন। 

‘চলে বদলে যাই!’

“অনেকদিন ভেবেছি দেখা করবো সেটা আর হয়নি”- বলে বদলে যাওয়ার গল্প শেষ করলেন। এটাও বললেন, যে সময় চলে গেছে সেটা ফেরানো সম্ভব নয়। সুমন একবুক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেনে, “বদলানোর সুযোগ নেই এখন আর। যা হওয়ার তা হয়েছে। আমরা তাকে মিস করি। আমি বিশ্বাস করি - তিনিও আমাদের মিস করেন।”

“আবার দেখা হবে বাচ্চু ভাই”-  বলে অসীমের উদ্দেশ্যে তাকিয়ে আইয়ুব বাচ্চুকে যেন স্মরণ করে শেষ করলেন। সুমন পাটওয়ারীর তখন ঠোঁটে হাসি, চোখে আইয়ুব বাচ্চুকে কাছে না পাওয়ার অব্যক্ত বেদনা।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ