• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

চুলকে সূর্যের আলো, বাতাস ও বৃষ্টির পানি থেকে সুরক্ষিত রাখতে

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

বর্তমানে দূষণ এত বেড়েছে যে, যারা চুল খুলে রাখতে পছন্দ করেন, তারাও পনিটেইল কিংবা খোঁপা বেঁধে বাইরে বের হচ্ছেন। কারণ বাতাসে যে পরিমাণ ধুলোবালি ও কালো ধোঁয়া ওড়ে, তাতে চুল খুব অল্প সময়েই ময়লা হয়ে পড়ে। আর রোজ শ্যাম্পু করা যে চুলের পক্ষে মোটেও ভালো নয়, তা তো সবারই জানা। রোজ শ্যাম্পু করলে চুলের আর্দ্রতা কমে যায় ও চুল স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য হারায়। চুলের স্বাভাবিক জেল্লা ধরে রাখার জন্য সপ্তাহে নিয়মিত যত্ন নেয়া খুবই প্রয়োজন। নিয়মিত যত্ন নিলে ও চুলকে সুরক্ষা দিতে পারলে অল্প দিনেই চুলের হারানো স্বাস্থ্য ফিরে আসবে। জেনে নিন সহজ উপায়গুলো—

চুলের সুরক্ষা

চুলকে সূর্যের আলো, বাতাস ও বৃষ্টির পানি থেকে সুরক্ষিত রাখুন। অতিরিক্ত সূর্যতাপ, গরম, ধুলোময়লা, দূষণে চুলের স্বাস্থ্যহানি ঘটে। এতে করে স্কাল্পে ময়লা জমে ও চুলে পুষ্টি পৌঁছাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। তাই বাইরে বের হওয়ার সময় স্কার্ফ, টুপি বা ছাতা ব্যবহার করুন।

ভেজা চুলের দেখাশোনা

ভেজা চুল স্বভাবতই খুব নরম থাকে, তাই সহজেই ভেঙে যায়। সেজন্য চুল শ্যাম্পু করার সময় স্কাল্পে আলতো হাতে ম্যাসাজ করুন। চুল ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে মুছে নিন। অনেকে চুল দ্রুত শুকানোর জন্য তোয়ালে জড়িয়ে রাখেন চুলে। এতে চুলের গঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাছাড়া চুল মোছার পর ভেজা অবস্থায় আঁচড়ানো যাবে না। এতে চুল পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

নিয়মিত কন্ডিশনার করুন

প্রতিবার চুল ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজিং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, চুল শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার লাগাতে হবে। চুলের মসৃণতা ধরে রাখতে সহায়তা করে কন্ডিশনার। খেয়াল রাখতে হবে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার যেন একই ব্র্যান্ডের হয়।

হিট দেয়া থেকে বিরত থাকুন

হেয়ার স্ট্রেইটনার, কার্লার যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করতে হবে। কারণ অতিরিক্ত হিটে চুলের আর্দ্রতা কমে যায়। ফলে চুল হয়ে পড়ে শুষ্ক ও রুক্ষ।

শক্ত করে চুল বাঁধা নয়

খুব শক্ত করে চুল বাঁধবেন না। শক্ত করে চুল বাঁধলে চুল পেছনের দিকে টান লেগে গোড়া থেকে আলগা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এজন্য রাতে চুল আঁচড়ে হালকা করে বেঁধে ঘুমিয়ে পড়ুন। বেণি করলে চুল কুঁকড়ে যায় ও ভঙ্গুরতাপ্রবণ হয়ে পড়ে।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস

আপনার সুস্থতার প্রতিফলন পড়ে চুলেও। আপনি যদি শারীরিকভাবে ফিট থাকেন, তাহলে তার রেশ থাকবে আপনার চুলেও। ভিটামিন, আয়রন ও প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে চুল ভালো থাকে। যদি খাবার থেকে এসব উপাদান গ্রহণ করা সম্ভব না হয়, তাহলে সম্পূরক গ্রহণ করতে হবে।

চুলের জন্য বেশি প্রসাধনী নয়

চুলের স্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য কখনই অনেক বেশি ধরনের শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও সিরাম ব্যবহার করা ঠিক না। তাছাড়া প্যাকেটজাত হেয়ারপ্যাক যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন। চেষ্টা করুন যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক সমাধান বেছে নেয়ার।

চুল সুস্থতায় করণীয়

চুলে নিয়মিত তেল ম্যাসাজ করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। পাশাপাশি এতে স্ট্রেস কমে। নারকেল তেল, জলপাই তেল বা আমন্ড তেল যেকোনোটাই চুলের পক্ষে উপকারী। সপ্তাহে একদিন পর পর চুলে তেল গরম করে লাগিয়ে রেখে দিন ১ ঘণ্টা। তারপর চুলের উপযোগী কোমল কোনো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো কন্ডিশনিংয়ের জন্য সারা রাত রেখে দিয়ে সকালে শ্যাম্পু করা যেতে পারে।

কলা ও ডিম

কলা চুলের সুস্থতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। কলা পটাশিয়ামে ভরপুর, যা চুলের এলাস্টিসিটি ঠিক রাখে। কলা মথে চুলে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। এরপর ভালো শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া চুলের মসৃণতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে কলার পেস্ট। অন্যদিকে চুলে সিল্কিভাব ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে ডিম। একটি ডিম ফেটে তাতে এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এরপর তা চুলে লাগিয়ে রেখে দিন ১৫-২০ মিনিট। এরপর কোমল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

মেয়োনেজ

মেয়োনেজ চুলে ডিপ কন্ডিশনিংয়ের কাজ করে। চুলে পানি স্প্রে করে মেয়োনেজ লাগিয়ে রেখে দিন ১ ঘণ্টা। এরপর শ্যাম্পু করে চুল শুকিয়ে নিন।

মেথি

চুলের মসৃণতার জন্য বহু বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে মেথি। দুই চা চামচ মেথি সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে তা বেটে মিহি পেস্ট তৈরি করে চুলে লাগান। আধঘণ্টা রেখে দিন, এরপর স্বাভাবিক নিয়মে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে যত্ন নিলে চুল থাকবে খুশকিমুক্ত ও ঝরঝরে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ