ভোটকেন্দ্রে বিজয়ী প্রার্থীকে মারধর করলেন পরাজিত প্রার্থী

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার পুইশুরে ইউপি নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিজয়ী প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় বিজয়ী ইউপি সদস্য রাজু শিকদারের ছোট ভাই রোমান শিকদার বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে কাশিয়ানী থানায় একটি মামলা করেছেন।

এ ছাড়া প্রিসাইডিং অফিসারকে লাঞ্ছিত, পোলিং এজেন্ট, ভোটকেন্দ্র ভাঙচুর ও ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী সেলিম মোল্যা ও তার সমর্থদের ওপর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পুইশুর ৯নং ওয়ার্ডের ভোটকেন্দ্রে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

এতে ওই কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা পোলিং এজেন্ট এসএম আব্দুল্লাহ ও সাইফুল সরদার এবং বিজয়ী ইউপি সদস্য মো. রাজু শিকদার গুরুতর আহত হন। আহতরা কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিয়ানী থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ ফিরোজ আলম।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে উপজেলার পুইশুর ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হিসেবে মো. রাজু শিকদারকে বিজয়ী ঘোষণা করে ফল ঘোষণা করা হয়। এতে পরাজিত ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী সেলিম মোল্যা ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো রামদা, লোহার রড ও লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লোকজন নিয়ে বিজয়ী ইউপি সদস্য রাজু শিকদারের বাড়িতে গিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। বাধা দিতে গেলে রাজু শিকদার ও তার পরিবারের লোকজনকে বেধড়ক মারপিট করা হয়।

এ সময় হামলাকারীরা স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরে আহতদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ ঘটনায় রাজু শিকদারের ছোট ভাই বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় একটি মামলা করেছেন বলেও জানান তিনি।

কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নির্বাচনে ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী সেলিম মোল্লা দুই ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। তিনি এ ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় আরও দুবার ভোট গণনা করান। তাতেও জয়ী না হতে পেরে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিপুলসংখ্যক লোকজন নিয়ে ভোটকেন্দ্র ঘিরে ফেলেন এবং ভোটকেন্দ্রের টিনের বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

তাতে বাধা দিতে গেলে তাকে লাঞ্ছিত ও দায়িত্বরত পুলিশ, পোলিং এজেন্টদের ওপর হামলা চালায় তারা। প্রাণভয়ে পুলিশকে গুলি করার নির্দেশ দিলে হামলাকারীরা ভয়ে পালিয়ে যায়। এতে কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা দুজন পোলিং এজেন্ট গুরুতর আহত হন বলেও জানান তিনি।

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রথীন্দ্র নাথ রায় প্রিসাইডিং অফিসারকে লাঞ্ছিত, পোলিং এজেন্টকে মারধর ও ভোটকেন্দ্রে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশকে বাদী হয়ে মামলার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া বিজয়ী ইউপি সদস্যের পক্ষ থেকে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি কঠোরভাবে তদারকি করা হবে বলে জানান তিনি।