• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

কক্সবাজারে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ৯ মডেল মসজিদ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১১ মে ২০১৯  

কক্সবাজারের আট উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ নয়টি মডেল মসজিদ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব মসজিদ নির্মাণ করা হবে। স্থান নির্ধারণ শেষে ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এ কাজ বাস্তবায়ন করবে কক্সবাজার গণপূর্ত বিভাগ।

কক্সবাজার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ফাহমিদা বেগম জানান, সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলায় দুইটি এবং বাকি উপজেলায় একটি করে মোট নয়টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হবে। সে হিসাবে নয়টি মসজিদে ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। 

তিনি জানান, কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের স্থানে ৬০ শতক জমির উপর নির্মাণ করা হচ্ছে কক্সবাজার জেলা মডেল মসজিদ। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সুবিধাসমূহ নিয়ে মডেল মসজিদের নকশাসহ ইতোমধ্যে বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া  বাকি আটটি মসজিদ নির্মাণ হবে  ৪০ শতক জমির উপর। স্থান ভেদে নির্মাণ ব্যয় কিছুটা কম বেশি হতে পারে। ইতোমধ্যে দেশের প্রতিটি উপজেলায় মসজিদের জন্য স্থান নির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, আগামী ১ জুলাই থেকে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। বাকি মসজিদগুলোর কাজও শুরু হবে পর্যায়ক্রমে। 

বাকি আটটি মসজিদ নির্মাণ হবে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের পাশে, রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল মাইমুন আলী মসজিদের পাশে, উখিয়া  মরিচ্যা বাজার স্টেশন, টেকনাফ পৌরসভা এলাকায়, চকরিয়া উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদের পাশে, মহেশখালী উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদের পাশে এবং পেকুয়া ও কুতুবদিয়াতে একই আঙ্গিকে মডেল মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে।

উপ-পরিচালক ফাহমিদা জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পরে এটা হয়ে উঠে বিশ্বের অন্যতম রাষ্ট্রায়ত্ত সেবা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। মাঝখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যক্রম কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়লেও বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে জনকল্যাণ মুখী কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছে। মাঠ পর্যায়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এখন সাধারণ মানুষের কাছে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। 
  
কক্সবাজার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ সরওয়ার আকবর জানান, প্রতিটি মডেল মসজিদ হবে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। প্রতিটি মসজিদের সঙ্গে থাকবে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। যেখানে থাকবে নারী এবং পুরুষের জন্য পৃথক অজু ও নামাজের ব্যবস্থা, লাইব্রেরি গবেষণাগার, দ্বীনি দাওয়াত কার্যক্রম, পবিত্র কোরআন হেফজখানা, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মরদেহের গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, ইমাম মোয়াজ্জিনের আবাসন ব্যবস্থাসহ কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিসসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা।

তিনি জানান, অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এবং আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন এসব মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শেষ হলে গ্রামাঞ্চলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সেবার পরিধি অনেকগুণ বেড়ে যাবে।

কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি সোলাইমান কাসেমী বলেন, মডেল মসজিদ নির্মাণের বিষয়টি সরকারের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। 

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচ এম মাহফুজুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সারাদেশে মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়। আমি মনে করি, এই মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শেষ হলে মুসল্লিদের নামাজ আদায়সহ একই স্থানে নানামুখী সেবা পাবে সর্বস্তরের মানুষ।

কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, এক সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নাম শোনা যেতো শুধু চাঁদ দেখা কমিটির সভায়। কিন্তু এখন দেশের প্রতিটি জায়গায় মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রম চালু করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে সাধারণ মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে গেছে। বর্তমানে প্রতিটি উপজেলায় যে মডেল মসজিদ নির্মাণের কার্যক্রম সরকার হাতে নিয়েছে সেটা স্বাধীনতার এতো বছরেও কোনো সরকার চিন্তাও করেনি। তাই আমি মনে করি মডেল মসজিদ গুলো শুধু কোনো আধুনিক ভবন হবে তা নয়, সেখানে  থাকবে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ