ইসলামে স্বাধীনতার আনন্দ ও প্রত্যাশা
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০২১
জন্মগতভাবে সব সৃষ্টিই স্বাধীন। আর স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করা সব সৃষ্টিরই মৌলিক অধিকার। শুধু মানুষই নয় বরং কোনো প্রাণীই পরাধীন থাকতে চায় না। স্বাধীনতার আনন্দ এত ব্যাপক যে, তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। মানবতার মহান জীবন ব্যবস্থা ইসলামেও স্বাধীনতার মর্যাদা, আনন্দ ও প্রত্যাশা সবকিছুর ওপরে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীতে, যাতে তোমরা একে অন্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে তোমাদের মধ্যে অধিক মুত্তাকি। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু জানেন, সব খবর রাখেন।’ (সুরা হুজুরাত : আয়াত ১৩)
এ আয়াতে একে অন্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পারাই হচ্ছে মানুষের স্বাধীনতা। কেউ স্বাধীন না হলে পরস্পর পরিচয় ভাব-বিনিময় ও সুসম্পর্ক তৈরি যেমন সম্ভব নয়; তেমনি সুন্দর সহাবস্থানেরও কোনো সুযোগ নেই।
স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, আত্মমর্যাদাবোধ এবং নিজেদের ন্যায্য অধিকার থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছিল বাংলার মানুষ। নিজেদের অধিকার আদায়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার স্বপ্নে জীবনবাজি রেখে অত্যাচারী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাংলার সংগ্রামী জনতা। এ সংগ্রাম বিজয়ে রূপ নেয়। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ফসল আমাদের স্বাধীনতা। এ স্বাধীনতা মূলমন্ত্র হলো-
‘মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। সব মানুষই পরস্পর ভাই ভাই। সাদা-কালো, লম্বা-খাটোয় স্বাধীনতা ভোগের কোনো পার্থক্য নেই। বর্ণবৈষম্য, ভাষাবৈষম্য কিংবা সহাবস্থানের অধিকারেও কোনো কমবেশি হবে না। কেননা জগতের সব মানুষ একই পিতা-মাতার সন্তান। সবাই বাবা আদম আলাইহিস সালাম আর মা হাওয়া আলাইহিস সালামের সন্তান।’
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের এ স্বাধীনতা ও অধিকারের প্রশ্নে বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে ঘোষণা করেছিলেন-
‘কালোর ওপর সাদার প্রাধান্য নেই, অনারবের ওপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই।’ (বুখারি)
এ স্বাধীনতা ও স্বাধীন জীবনে আনন্দ-ভোগবিলাস প্রতিটি মানুষের জন্য আল্লাহর দেয়া সেরা নেয়ামত। অনেক সময় যারা স্বাধীন তারা এ বিষয়টি উপলব্দি করতে পারে না। বরং এটি শুধু তারাই বেশি উপলব্দি করতে পারে, যারা পরাধীনতা ভোগ করেছে কিংবা বন্দী জীবন কাটিয়েছে।
যেহেতু সৃষ্টিগতভাবে জগতের সব মানুষের মৌলিক অধিকার হচ্ছে স্বাধীনতা। ইসলামের মূল শিক্ষাও এটি। এ কারণেই রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাসত্বের জীবন থেকে মানুষকে স্বাধীন করতে পিছপা হননি। তিনি দাসদের মুক্ত করে তাদের সন্তান ও ভাই হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দিয়েছেন। দাসদের মুক্তি দিয়ে মসজিদে নববির প্রধান মুয়াজ্জিন থেকে শুরু করে যুদ্ধের ময়দানের সেনাপতিও নিয়োগ দিয়েছেন।
স্বাধীনতার এ আনন্দেই ইসলাম দুনিয়ার বুবে বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছে। ধনী-দরিদ্র এক কাতারে এসে ইসলামের ছায়া তলে আশ্রয় নিয়েছেন। পৃথিবীব্যাপী স্বাধীনতার বাণীই প্রচার করেছে ইসলাম।
স্বাধীনতার স্বাদ যে শুধু আরব-অনারব পেয়েছে এমনটিই নয়, বরং ভারতবর্ষেও ইসলাম দিয়েছে স্বাধীনতার স্বাদ। শ্রেণিবৈষম্য ও বর্ণবৈষম্যের শিকারে নির্যাতিত-নিপীড়িত কোটি কোটি মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ নিতেই ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে। স্বাধীনতার আনন্দ, ভোগবিলাস ও মুক্তির সুধা পান করেছে বিভিন্ন ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষ।
মনে রাখতে হবে
স্বাধীনতা শুধু মানুষের মৌলিক অধিকারই নয় বরং ইসলামের সুমহান শিক্ষাও বটে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কতটা স্বাধীনচেতা রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন তার পরিচয় মেলে পঞ্চম হিজরির শাওয়াল মাসে সংঘটিত আহযাবের যুদ্ধে।
মদিনার অভিশপ্ত ইয়াহুদিদের প্ররোচনায় মক্কার কুরাইশরা যখন মদিনা আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়, সে দিন বিশ্বনবী মদিনার ইসলামি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রাখতে দাসত্বের জীবন থেকে মুক্ত হওয়া সাহাবি হজরত সালমান ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহুর পরামর্শ গ্রহণ করেন।
তিনি মদিনার চর্তুদিকে পরিখা খনন করেন। হজরত সালমান ফারসি বন্দিত্বের জীবন থকে মুক্ত হয়ে সেদিন মদিনার ইসলামি রাষ্ট্রকে পরাধীনতা থেকে স্বাধীন রাখতে বিস্ময়কর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।
আমাদের স্বাধীনতাও এর ব্যতিক্রম হয়নি। স্বাধীন জীবন ও অধিকার ফিরে পেতে ১৯৭১ সালে অসংখ্য জীবনের কুরবানি ও ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনাত অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এ জাতি। যার শুভ সূচনা হয়েছিল এ মার্চ মাসের ২৬ তারিখ প্রথম প্রহরে । আজ বাংলাদেশের মানুষের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’।
দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় ইসলামের দিকনির্দেশনা আজও সমহিমায় উজ্জ্বল। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিয়েছেন অমূল্য উপদেশ। স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তিনি বলেছেন-
- ‘একদিন ও একরাতের সীমান্ত পাহারা ধারাবাহিকভাবে এক মাসের রোজা পালন এবং সারারাত নফল ইবাদতে কাটানো অপেক্ষা উত্তম।’ (মুসলিম)
- ‘একদিন সীমান্ত রক্ষার কাজে নিযুক্ত থাকা হাজার দিনের মনজিল অতিক্রম অপেক্ষা উত্তম।’ (তিরমিজি)
স্বাধীনতার প্রত্যাশা
‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’তে ইসলামে বিশ্বাসী মুমিন মুসলমানের প্রত্যাশা কুরআনের সেই বাণীর বাস্তবায়ন; রাষ্ট্রক্ষমতা পেলে যে বাণী বাস্তবায়ন করতে বলেছেন স্বয়ং আল্লাহ। তাহলো-
الَّذِينَ إِن مَّكَّنَّاهُمْ فِي الْأَرْضِ أَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ وَأَمَرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنكَرِ وَلِلَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِ
তারা এমন লোক যাদেরকে আমি পৃথিবীতে শক্তি-সামর্থ (রাষ্ট্র ক্ষমতা) দান করলে তারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে, জাকাত আদায় করবে এবং সৎকাজে আদেশ দেবে এবং অসৎকাজে নিষেধ করবে। প্রত্যেক কর্মের পরিণাম আল্লাহর এখতিয়ারভূক্ত।’ (সুরা হজ : আয়াত ৪১)
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ঈমানি দায়িত্বও বটে। আর তাতেই ফুটে ওঠবে স্বাধীনতার প্রকৃত সুখ।
পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে কেয়ামত পর্যন্ত অক্ষুণ্ন রাখতে এবং স্বাধীনতার মান ও মর্যাদা রক্ষায় মহান আল্লাহর কাছে তাঁরই শেখানো ভাষায় দোয়া করাও সবার দায়িত্ব এবং কর্তব্য। তাহলো-
- رَبِّ اجْعَلْ هَـذَا الْبَلَدَ آمِنًا وَاجْنُبْنِي وَبَنِيَّ أَن نَّعْبُدَ الأَصْنَامَ
উচ্চারণ: রাব্বিঝআল হাজা বালাদা আমিনাওঁ ওয়াঝনুবনি ওয়া বানিইয়্যা আন নাবুদাল আচনাম।
অর্থ : ‘হে প্রভু! এই শহরকে শান্তিময় করে দাও। এবং আমাকে ও আমার সন্তানদিকে মূর্তিপূজা থেকে দূরে রাখ।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৩৫)
- اَللَّهُمَّ احْفَظْنَا بِلَادِنَا بَنْغَلَادِيْش
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাহফাজনা বিলাদিনা বাংলাদেশ।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমার দেশ বাংলাদেশকে হেফাজত করুন। আমিন।
- গোপালগঞ্জে সেপটিক ট্যাংকে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
- গোপালগঞ্জে বৈদেশিক মুদ্রা প্রতারক চক্রের ২ সদস্য গ্রেপ্তার
- উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
- শেখ হাসিনার আঁচলে মায়ের গন্ধ!
- জাতির পিতার সমাধিতে জাফর ওয়াজেদের শ্রদ্ধা
- দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের পদচিহ্নও থাকবে না: রাষ্ট্রপতি
- কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি
- কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ, এটি মিথ্যা প্রচার
- পিরামিডের রহস্য ভেদ করলো বিজ্ঞানীরা!
- জিয়াউর রহমান বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন- ওবায়দুল কাদের
- ইন্টারনেটের গতিতে দুই ধাপ এগোলো বাংলাদেশ
- অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যের চুক্তি
- চীনের ২৬ কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা
- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দেশে কাজ করছে ৪৫ সংস্থা:দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
- ঝড়ে লণ্ডভণ্ড স্টেডিয়াম, ‘অনিশ্চিত’ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ
- সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
- গাজায় দীর্ঘমেয়াদে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হামাস
- ভারতে তীর্থ থেকে ফেরার পথে বাসে আগুন, নিহত ৮
- জনগণকে আরো বেশি সেবা দিতে চায় পুলিশ: আইজিপি
- শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল
- নড়াইলে ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যায় ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
- দুবাইয়ে ৫৩২ বাংলাদেশির সম্পত্তি, কী বলছে দুদক
- বিএনপির সময় ঋণ খেলাপির তালিকা সবচেয়ে বড় ছিল: আইনমন্ত্রী
- নির্বাচনী ‘অস্বস্তি’ কাটিয়ে সামনে এগোনোর বার্তা ডোনাল্ড লু’র
- শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
- খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি তৈরি করে জিয়া: প্রধানমন্ত্রী
- নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নিহতের জেরে গোপালগঞ্জ উত্তাল
- জাতীয় শিশু দিবসের পুরস্কার বিতরন
- গোপালগঞ্জের হোটেল রোস্তরার খাবারের নমূনা সংগ্রহ শুরু
- বিশ্বকাপের আগে ভারতের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ
- টুংগীপাড়ার বাবুল শেখের অপকর্মের তথ্য ফাঁস
- সেই নারী কাউন্সিলর চামেলীকে দল থেকে বহিষ্কার
- কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা
- সম্পর্ক নতুন উচ্চতায়
সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের আমিরের - গণতন্ত্রে না ফিরলে বিলুপ্ত হবে বিএনপি: কাদের
- সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর নামে দুদকের পৃথক দুই মামলা
- চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডাবের দাম
- গোপালগঞ্জে ভাসুরের বিরুদ্ধে গৃহবধূর উপর এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ
- টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে চীনা রাষ্ট্রদূতের শ্রদ্ধা
- ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
- ঢাকার তাপমাত্রা দেখে সারা দেশের বিদ্যালয় বন্ধ করা যাবে না
- বগুড়ায় সিনেমা হলে টিকিটের সঙ্গে বিরিয়ানি ফ্রি
- আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারপতি
- বৃহস্পতিবার সারাদেশে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে
- গোপালগঞ্জের স্বামী হত্যায় স্ত্রী ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভাতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু
- পদ্মশ্রী পদক গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
- কোটালীপাড়ায় এক যুবককে গলা কেটে হত্যা
- ফিলিস্তিনের পক্ষে লেখায় ‘লাইক’ দেওয়ায় স্কুলশিক্ষককে চাকরিচ্যুত
- ঢাকায় কাতারের আমির
অগ্রাধিকার পাচ্ছে বাণিজ্য বিনিয়োগ ও ভূরাজনীতি