• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

ধূমপান-ডিম নিয়ে করা মার্কিন সমীক্ষা অসম্পূর্ণ: পুষ্টিবিদ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

কিছুদিন আগেই মার্কিন জনপ্রিয় একটি ম্যাগাজিনে ডিম আর ধুমপান প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানেডিমের কুসুমকে ক্ষতিকর বলে দাবি করা হয়। শুধু তাই নয় ধূমপানের মতই ক্ষতিকর বলে অবিহিত করা হয়। আর এই প্রতিবেদনকে সমর্থন করেন নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরাও। ওই গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ডিমে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকার কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এছাড়াও বলা হয় ডিম থেকে ক্যালশিয়াম পাওয়া যায়। কিন্তু এতে থাকা উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন থেকেই আর্থারাইটিসের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই গবেষকদের মতে ডিম থেকে যতটা দূরে থাকা যায় ততই ভাল। বারোশোরও বেশি রোগীর উপর গবেষণা চালিয়ে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।=

কিন্তু মার্কিন গবেষকদের এই সমীক্ষাকে অসম্পূর্ণ বলেই ব্যাখ্যা করছেন ভারতীয় পুষ্টিবিদ অরিত্র খাঁ।

তিনি বলেন, ধূমপানের সঙ্গে ডিমের তুলনা করাটাই অনুচিত। ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা প্রায় সকলেই অবগত। সুসম আহারের তালিকায় রয়েছে ডিম। শিশুর শারীরিক বিকাশ, রোগীর সেরে ওঠার পর শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে এর জুড়ি মেলা ভার! তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টরল, হার্টের সমস্যা, ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ডিমের কুসুম এড়িয়ে চলাই ভাল। কিন্তু ধূমপানের কোনও উপকারি দিকই নেই। ধূমপানের অভ্যাস সম্পূর্ণ রূপে ক্ষতিকর!

পুষ্টিবিদ অরিত্র খাঁ বলেন, ১০০ গ্রাম মুরগির ডিমে ২৫৫ মিলিগ্রাম আর হাঁসের ডিমে ৩৫৫ মিলিগ্রাম কোলেস্টরল থাকে। কিন্তু তাতে স্বাভাবিক ভাবে আমাদের রক্তের কোলেস্টরলের মাত্রাকে প্রভাবিত করে না। কিন্তু তাই বলে ডায়াবেটিক কোনও মানুষ বা যার কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা রয়েছে অথবা যার স্থুলতার সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ডিমের কুসুম খাওয়ার ফলে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু কোনও শিশু বা তরুণের ক্ষেত্রে দু’টো ডিম বা ডিমের কুসুম খেলে কোনও সমস্যই হবে না।

এর সঙ্গেই তিনি বলেন, ডিম হল ভিটামিন ডি আর ভিটামিন বি-১২-এর সহজলভ্য উত্স। যারা নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্যে রয়েছেন, খেলাধুলো করেন তারা দিনে দু’-তিনটি ডিম অনায়াসেই খেতে পারেন। তবে আমাশয় হলে সেরে না ওঠা পর্যন্ত ডিম না খাওয়াই ভাল। আসলে যারা ডিম খাচ্ছেন, তাদের শরীরে ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, অস্টিওপোরোসিস, হাই ব্লাডপ্রেসারের মতো কোনও সমস্যা থাকলে সেই সমস্যা বাড়তে পারে। কিন্তু তাই বলে ডিমের পুষ্টিগুণগুলি ভুলে গেলে চলবে না।

তাই পুষ্টিবিদ অরিত্র খাঁর পরামর্শ, ডিম খান শরীর বুঝে। মাত্রাতিরিক্ত ডিমের কুসুম না খাওয়াই ভাল। নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে দিনে দু’টো ডিম খাওয়া যেতেই পারে। আর একটা কথা, ধূমপানের অভ্যাস সব ভাবেই ক্ষতিকর। তার সঙ্গে ডিমের কুসুমের তুলনা করা কখনওই উচিত নয়।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ