• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

শখের জামদানি শাড়ি দীর্ঘদিন ভালো রাখবেন যেভাবে

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০২০  

নারী মানেই শাড়ি। আর বাঙালি নারী হলে তো কোনো কথাই নাই। শাড়ি ছাড়া যেন বাঙালি নারীর সংজ্ঞা অসম্পূর্ণ। বিশ্বের সব দেশেই বাঙালি নারী এবং দেশের পরিচয় বহন করে এদেশের তাঁতের এবং জামদানি শাড়ি। এমন কোনো বাঙালি নারীকে পাওয়া যাবে না যে তার সংগ্রহে দুই তিনটা জামদানি শাড়ি নেই। 

জামদানি শাড়ি বলতে গেলে বাংলার ঐতিহ্য বহন করে। জামদানির উপর আকর্ষণ ও টান স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকে তার অপূর্ব কারুকাজ সমন্বিত নকশা ও বৈচিত্রের জন্য। মিহি সুতার কাজে ফুটে ওঠা এক একটি শাড়ি যেন হাজারো গল্পের জন্ম দেয়। তবে খুবই দুঃখের বিষয় এই শাড়ির যত্ন নেয়া খুবই কঠিন। সামান্য অযত্নেই নষ্ট হয়ে যায় এই শাড়িগুলো। তাই পরার সময় এবং সংরক্ষণ করতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন। এতে করে বছরের পর বছর ধরে এই শাড়ি ভালো রাখা সম্ভব। 

তাহলে জেনে নিন শখের জামদানি শাড়ির যত্ন কীভাবে নিবেন- 

> আমরা অনেকেই আছি যে কোনো দামি শাড়ির পরিষ্কার করতে ড্রাই ওয়াশ করে থাকি। তবে সব শাড়ি ড্রাই ওয়াশের উপযোগী নাও হতে পারে। জামদানি শাড়ি ভুলেও ড্রাই ওয়াশ করবেন না। জামদানি শাড়ি করতে হয় কাটা ওয়াশ। ড্রাই ওয়াশে শাড়ির রং জ্বলে যেতে পারে।

> এই শাড়িতে অবশ্যই ফলস পাড় লাগাতে হবে। নাহলে পায়ে জড়িয়ে শখের জামদানি ছিঁড়ে যেতে পারে।

> জামদানি শাড়ি যাতে ফেঁসে না যায় সেজন্য অনেকে রোল করে রাখেন। বাসায় কিভাবে এমনভাবে রোল করে রাখা যায় যাতে শাড়িতে একটিও ভাঁজ দিতে না হয় সেটা একটি কৌশলের ব্যাপার। কারণ ভাঁজ মানেই সেই ভাঁজের অংশে ফেঁসে যাবে শাড়ি।

এক্ষেত্রে সমাধান হতে পারে পুরাতন শাড়ি বা পাটি। জামদানিগুলো একসঙ্গে পেঁচিয়ে ফেলতে হবে পুরোনো শাড়ি বা পাটিতে। পাটি যেভাবে রোল করে রাখা হয় সেভাবেই রাখতে হবে ঘরের নিরাপদ কোনো জায়গায়। কোলবালিশের কভারের মতো লম্বা একটা মাপমত কভার করে নেয়া যেতে পারে শেষ ধাপের সুরক্ষা হিসেবে।

> জামদানি বেশীদিন তুলে রাখলেই তার আয়ু কমবে বরং মাঝে মাঝেই পরুন। বাতাসে শুকিয়ে তুলে রাখুন। এতে করে শাড়িতে ভাঁজ বসবে না। 

> শাড়ি পরার পর সঙ্গে সঙ্গেই ভাঁজ করে বা রোল করে না রেখে হালকা রোদে দিতে হবে। তবে কড়া রোদে জামদানি দেয়া যাবে না। রোদ না পেলে অন্তত বাতাসে শুকিয়ে নিতে হবে। 
 
> দুর্ঘটনাবশত জামদানি শাড়িতে কোনো দাগ লেগে গেলে ঘষে ঘষে তুলতে যাবেন না। এতে আরো বাজে অবস্থা হবে। সেক্ষেত্রে ওই জায়গাটা ড্রাই ওয়াশ করে নিতে পারেন।   
 
> শাড়ি যদি অনেক দিন না পরা হয় তবে নরম হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রেও সমাধান কাটা ওয়াশ। তাতিঁরা অনেক দক্ষতার সঙ্গে কাটা ওয়াশ করে থাকেন। বলা হয় জামদানিকে পূনর্জন্ম দেয় কাটা ওয়াশ। তাঁতিদের বিশেষ এই ওয়াশের পর মনে হবে জামদানি শাড়িটি একেবারে নতুন হয়ে গিয়েছে।

> অনেক লন্ড্রি কাটা ওয়াশ করায়, তবে তাঁতিদের কাছ থেকে সরাসরি করাতে পারলেই সবচেয়ে ভালো সমাধান পাওয়া যাবে।

> জামদানি শাড়ির ব্লাউজ শাড়ির চেয়েও স্পর্শকাতর হয়। যেহেতু একই কাপড় কেটে ব্লাউজ করা হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সঠিক উপায় হল, হলো অন্য কাপড় দিয়ে ব্লাউজ তৈরি করে ব্লাউজ পিসের পাড়টা লেসের মতো হাতায় লাগিয়ে নেয়া। 

এভাবে আপনার শখের জামদানি শাড়ির যত্ন নিতে পারেন। আবার এই শাড়ি ব্যবহারে মাথায় রাখুন এই বিষয়গুলো। এতে অনেকদিন ব্যবহার করতে পারবেন এই শাড়িগুলো। 

 

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ