চিকিৎসায় বিপ্লব আনছে চীন?
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০১৯
এবার চিকিৎসা খাতে জোর পদক্ষেপ নিতে চাইছে চীন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ে এরই মধ্যে অনেকটা এগিয়ে গেছে চীন। দেশটি এবার চিকিৎসায় ‘বিপ্লব’ আনতে চাইছে। শুধু নিজেদের জনগণের জন্যই নয়, একই সঙ্গে পুরো পৃথিবীর জৈবপ্রযুক্তি ও ওষুধশিল্পে অগ্রগণ্য ভূমিকায় আসীন হতে চাইছে সি চিন পিংয়ের দেশ।
যদিও এ ক্ষেত্রে মূল প্রয়োজনটি সৃষ্টি হয়েছে চীনের ভেতর থেকেই। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক হিসাবে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে চীনের ২০ কোটি নাগরিকের বয়স হয়ে যাবে ৬০ বছর। বয়স্ক নাগরিকদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকায় চীনের এখন প্রয়োজন নানা ধরনের উন্নত ওষুধ ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রযুক্তি। এ ছাড়া বর্তমানে বিশ্বের প্রতি চারজন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর একজন চীনা। তাই দেশটি নিজস্ব সক্ষমতা তৈরির জন্য স্থানীয় ওষুধশিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এর সঙ্গে সঙ্গে জৈবপ্রযুক্তির নিত্যনতুন সুবিধাও কাজে লাগাতে চায় চীন। তাই জৈবপ্রযুক্তি–বিষয়ক ইউরোপ-আমেরিকার অসংখ্য স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করছে দেশটি।
এত দিন মূলত পশ্চিমা বিশ্বে তৈরি উন্নত ওষুধ আমদানি করেই অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে গেছে চীন। এর পাশাপাশি চীনের হাজার হাজার স্থানীয় ওষুধ কোম্পানি তৈরি করছিল ‘কপি-পেস্ট’ ওষুধ। অর্থাৎ উন্নত ওষুধের ফর্মুলার লাইসেন্স কিনে তা উৎপাদন করত চীনা কোম্পানিগুলো। কয়েক বছর ধরে সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে দেশটি। অন্যের ফর্মুলায় ওষুধ তৈরির পরিবর্তে গবেষণার মাধ্যমে চীন উন্নত ধরনের ওষুধ উদ্ভাবন করতে চাইছে। চীনের লক্ষ্য—এর মাধ্যমে একসময় ইউরোপ-আমেরিকার বাজারও দখলে আনা। বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, নিকট ভবিষ্যতে চীনেই সৃষ্টি হবে জৈবপ্রযুক্তির ‘পাওয়ারহাউস’।
চীনা প্রতিষ্ঠান ‘মাই বায়ো-মেড’। এই প্রতিষ্ঠানের সিইও ও প্রতিষ্ঠাতা জ্যাকসন ঝু ওয়েইয়ান বলছেন, চীন উদ্ভাবনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন বিষয়কে সমন্বয় করার চেষ্টা চলছে। অর্থাৎ জৈবপ্রযুক্তির সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির একটি সুষম মেলবন্ধন করার উদ্যোগ নিচ্ছে চীনারা।
অন্যের ফর্মুলায় ওষুধ তৈরির পরিবর্তে গবেষণার মাধ্যমে চীন উন্নত ধরনের ওষুধ উদ্ভাবন করতে চাইছে। চীনের লক্ষ্য—এর মাধ্যমে একসময় ইউরোপ-আমেরিকার বাজারও দখলে আনা। ছবি: রয়টার্সফিলিপস কোম্পানির পক্ষ থেকে চলতি বছর ‘ফিউচার হেলথ ইনডেক্স’ নামের একটি সূচক তৈরি করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ডিজিটাল স্বাস্থ্যপ্রযুক্তি গ্রহণের ক্ষেত্রে অন্য সব দেশের চেয়ে এগিয়ে আছে চীন। এ ক্ষেত্রে টেলিহেলথ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করছে দেশটি।
দেশীয় ওষুধশিল্পকে এগিয়ে নিতে এরই মধ্যে এই খাতে চীন বিনিয়োগ বাড়িয়ে দিয়েছে। আইকিউভিআইএ নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, ২০১৭ সালে ওষুধের বৈশ্বিক বাজারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোক্তা ছিল চীন। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২২ সালের মধ্যে দেশটির ওষুধের বাজার ১৪৫ বিলিয়ন থেকে ১৭৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে।
ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, ২০১৫ সাল থেকে ওষুধশিল্পের স্থানীয় বাজারে আমূল পরিবর্তন আনতে কাজ শুরু করে চায়না ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিডিএ)। ক্রমবর্ধমান বয়স্ক নাগরিকদের কথা মাথায় রেখে প্রথমে দেশের বাইরে থেকে আনা উন্নত ওষুধগুলোর ছাড়পত্র দ্রুত দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কমিয়ে দেওয়া হয় আমদানি শুল্ক। এ ছাড়া স্থানীয় কারখানাগুলোর ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল। এবার স্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারীদের জন্য ফের কঠোর নিয়মকানুন চালু করছে সিডিএ। এতে হয়তো অনেক চীনা কোম্পানি বন্ধও হয়ে যেতে পারে। তবে চীনা নিয়ন্ত্রক সংস্থার নীতি হলো—কিছুটা ক্ষতি স্বীকার করে হলেও উন্নত মান নিশ্চিতের রাস্তায় হাঁটা। বলা হচ্ছে, এর ফলে দীর্ঘ মেয়াদে লাভ হবে চীনেরই। কারণ, উন্নত মানের ওষুধ তৈরি করতে হলে গবেষণা বিভাগ জোরদার করতেই হবে। আর এই গবেষণাতেই মিলবে নতুন উদ্ভাবন। এক হিসাবে দেখা গেছে, বর্তমানে চীন তার মোট জিডিপির আড়াই শতাংশ খরচ করছে গবেষণায়।
এখন ওষুধসংক্রান্ত নানা লাইসেন্স চীন কিনতে শুরু করেছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর শুধু চীনা জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোই ১৬৪টি আন্তর্দেশীয় লাইসেন্স কেনার চুক্তি করেছে। পাঁচ বছর আগের হিসাব ধরলে এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। এই চুক্তিগুলো প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের। বিদেশি স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগের পরিমাণ দিনকে দিন বাড়াচ্ছে চীন। এর মধ্য দিয়ে দেশটি নতুন নতুন উদ্ভাবন করায়ত্ত করতে চাইছে, যাতে একই সঙ্গে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যায়। ঠিক একইভাবে বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তিগত স্টার্টআপেও চীন বিনিয়োগ বাড়িয়েছিল।
চীনের বেইজিংয়ে একটি জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন একজন কর্মী। ছবি: এএফপিএত আলোর নিচে অন্ধকারও আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, চীনের বড় বড় শহরকেন্দ্রিক হাসপাতালগুলো যতটা উন্নত, শহরের বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে পরিস্থিতি ততটা ভালো নয়। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অভাবও প্রকট। চীনের প্রতি ৬ হাজার ৬৬৬ জন নাগরিকের জন্য ১ জন চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, মাথাপিছু দেড় থেকে দুই হাজার নাগরিকের জন্য একজন করে চিকিৎসক থাকা প্রয়োজন। চীনের প্রত্যন্ত এলাকায় হাসপাতালের সংখ্যাও অপ্রতুল, কিছু ক্ষেত্রে শত শত মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে পৌঁছাতে হয় হাসপাতালে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই চিত্রের পরিবর্তন না হলে নতুন নতুন ওষুধ উদ্ভাবন করেও চীনের সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবার পরিপূর্ণ উন্নতি হবে না।
চীনে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। চায়না ক্যানসার ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ৭০ শতাংশের রোগ চিহ্নিত হয় এবং তার চিকিৎসা শুরু হয় একেবারে শেষ পর্যায়ে। সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন প্রাথমিক পরীক্ষায় এই রোগ আগেভাগে চিহ্নিত করা সম্ভব। কিন্তু উন্নত শহরগুলোর বাইরে থাকা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোয় এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় না। ফলে, সামগ্রিকভাবে চীনের স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির সুফল পাচ্ছে না দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলের অধিবাসীরা।
অবশ্য চীন সরকারও বসে নেই। ক্যানসার নিরাময়ের নিত্যনতুন গবেষণায় কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ ঢালা হচ্ছে। এরই মধ্যে ক্যানসার নিরাময়ের জন্য ‘সিএআর-টি’ নামের একটি নতুন থেরাপি নিয়ে কাজ করছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। সুযোগ বুঝে তাতে বিনিয়োগ করছে পশ্চিমারাও।
এটি ঠিক যে চিকিৎসা খাতে ব্যাপক পরিবর্তনের পথে এগোচ্ছে চীন। কিন্তু পরিবর্তনের গতি যতই থাকুক, তা কখনোই নিশ্চিত সাফল্যের নিশ্চয়তা দেয় না। নতুন নতুন ওষুধ বা জৈবপ্রযুক্তি উদ্ভাবন প্রক্রিয়াটি বেশ অনিশ্চিত। আশার কথা হচ্ছে, অনিশ্চিত জেনেও চীন এই পথে এগোতে শুরু করেছে। হয়তো একদিন উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাদের চীনেই যেতে হবে!
- গোপালগঞ্জে সেপটিক ট্যাংকে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
- গোপালগঞ্জে বৈদেশিক মুদ্রা প্রতারক চক্রের ২ সদস্য গ্রেপ্তার
- উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
- শেখ হাসিনার আঁচলে মায়ের গন্ধ!
- জাতির পিতার সমাধিতে জাফর ওয়াজেদের শ্রদ্ধা
- দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের পদচিহ্নও থাকবে না: রাষ্ট্রপতি
- কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি
- কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ, এটি মিথ্যা প্রচার
- পিরামিডের রহস্য ভেদ করলো বিজ্ঞানীরা!
- জিয়াউর রহমান বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন- ওবায়দুল কাদের
- ইন্টারনেটের গতিতে দুই ধাপ এগোলো বাংলাদেশ
- অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে যুক্তরাজ্যের চুক্তি
- চীনের ২৬ কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা
- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দেশে কাজ করছে ৪৫ সংস্থা:দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
- ঝড়ে লণ্ডভণ্ড স্টেডিয়াম, ‘অনিশ্চিত’ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ
- সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
- গাজায় দীর্ঘমেয়াদে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হামাস
- ভারতে তীর্থ থেকে ফেরার পথে বাসে আগুন, নিহত ৮
- জনগণকে আরো বেশি সেবা দিতে চায় পুলিশ: আইজিপি
- শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল
- নড়াইলে ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যায় ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
- দুবাইয়ে ৫৩২ বাংলাদেশির সম্পত্তি, কী বলছে দুদক
- বিএনপির সময় ঋণ খেলাপির তালিকা সবচেয়ে বড় ছিল: আইনমন্ত্রী
- নির্বাচনী ‘অস্বস্তি’ কাটিয়ে সামনে এগোনোর বার্তা ডোনাল্ড লু’র
- শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
- খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি তৈরি করে জিয়া: প্রধানমন্ত্রী
- নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নিহতের জেরে গোপালগঞ্জ উত্তাল
- জাতীয় শিশু দিবসের পুরস্কার বিতরন
- গোপালগঞ্জের হোটেল রোস্তরার খাবারের নমূনা সংগ্রহ শুরু
- বিশ্বকাপের আগে ভারতের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ
- টুংগীপাড়ার বাবুল শেখের অপকর্মের তথ্য ফাঁস
- সেই নারী কাউন্সিলর চামেলীকে দল থেকে বহিষ্কার
- কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা
- সম্পর্ক নতুন উচ্চতায়
সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের আমিরের - গণতন্ত্রে না ফিরলে বিলুপ্ত হবে বিএনপি: কাদের
- সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর নামে দুদকের পৃথক দুই মামলা
- চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডাবের দাম
- গোপালগঞ্জে ভাসুরের বিরুদ্ধে গৃহবধূর উপর এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ
- টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে চীনা রাষ্ট্রদূতের শ্রদ্ধা
- ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
- ঢাকার তাপমাত্রা দেখে সারা দেশের বিদ্যালয় বন্ধ করা যাবে না
- বগুড়ায় সিনেমা হলে টিকিটের সঙ্গে বিরিয়ানি ফ্রি
- আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারপতি
- বৃহস্পতিবার সারাদেশে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে
- গোপালগঞ্জের স্বামী হত্যায় স্ত্রী ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভাতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু
- পদ্মশ্রী পদক গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
- কোটালীপাড়ায় এক যুবককে গলা কেটে হত্যা
- ফিলিস্তিনের পক্ষে লেখায় ‘লাইক’ দেওয়ায় স্কুলশিক্ষককে চাকরিচ্যুত
- ঢাকায় কাতারের আমির
অগ্রাধিকার পাচ্ছে বাণিজ্য বিনিয়োগ ও ভূরাজনীতি