• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

রক্ত ক্যান্সার : যা না জানলেই নয়

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৯  

ক্যান্সার!!! সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন শব্দগুলোর একটি। অনেক সন্তানকে বাবা মা থেকে, অনেক স্ত্রীকে স্বামী থেকে, অনেক ভাইকে বোন থেকে আলাদা করেছে এই অল্প কিছু অক্ষরের শব্দটি। কিন্তু মানুষ থেমে থাকেনি। নানান দেশের নানা গবেষনা, তুখোড় বিজ্ঞানী আর সম্মানিত মেধাবী চিকিৎসকগণের ঐকান্তিক চেষ্টায় অনেক ক্যান্সারও আজ পরাজিত। আমাদের দেশেও হচ্ছে ক্যান্সারের চিকিৎসা। পিছিয়ে নেই আমাদের চট্টগ্রামও। এমন কিছু আশার কথা নিয়েই রক্ত ক্যান্সার বিষয়ক আজকের লিখা।
রক্তের যে কোন কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি থেকেই রক্তের ক্যান্সার জন্ম নেয়। একটি অস্বাভাবিক কোষ থেকে দশটি, সেই দশটির প্রতিটি থেকে আরও দশটি করে পরবর্তিতে আরও শত-সহস্র-লক্ষ, এভাবেই এরা বাড়তে থাকে। অস্বাভাবিক কোষগুলো নিজের কাজ ঠিক মত করে না, অন্য স্বাভাবিক কোষকে জন্মনিয়ে ঠিক মত বাড়তে দেয়না, বিভিন্ন অংগে জমে গিয়ে সেইসব অঙ্গের কাজে নানা বাধা দেয়। ফলে কঠিন হয়ে পরে সাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা। শেতকণিকা বা ডইঈ-ই প্রধানত রক্ত ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয়। রক্তের ক্যান্সার সব বয়সের, পেশার, জাত, ধর্মের নারী পুরুষের হতে পারে। কোন কোন নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে একটু কম বেশি হলেও মোটামুটি সমাজের সব অংশ থেকেই এসব রোগের রোগীগণ আসেন।
সহজভাবে বললে রক্তের ক্যান্সার দুই রকম। একিউট বা স্বল্প সময়ে খুব দ্রুত জন্ম নেয়া ক্যান্সার যার মধ্যে পরে এ.এল.এল. (একিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া), এএমএল (একিউট মায়েলোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া), মাল্টিপল মায়েলোমা (অনেক সময় আস্তে আস্তেও হয়) আর কিছু লিম্ফোমা (হজকিন ও নন হজকিন লিম্ফোমা)। আরেক ধরনের রক্তের ক্যান্সার হল ক্রনিক বা লম্বা সময় ধরে ধীরে ধীরে বাড়া ক্যান্সার। এর মধ্যে পরে সিএলএল (ক্রনিক লিম্ফোসাইটিক লিউকেমিয়া), সিএমএল (ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া) ও কিছু লিম্ফোমা। এর বাইরে এমডিএস (মায়েলো ডিসপ্লাসিয়া), পলিসাইথেমিয়া, মায়েলোফাইব্রোসিস ইত্যাদি কিছু রক্তের রোগকে ক্যান্সার বলবেন কি বলবেন না এ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী মহল আর দেশ বিদেশের বিজ্ঞ চিকিৎসকগণ নানা মতে বিভক্ত।
রক্ত ক্যন্সারের লক্ষণ হল জ্বর, অধিক দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, চামড়ায় লাল কাল রক্তের দাগ আসা, মাড়িতে রক্ত পড়া, গলায়, বগলে, কোমরের কুঁচকিতে গোল হয়ে ফুলে যাওয়া (টিউমার বা ছোট বলের মত), পেট ফোলা, জন্ডিস, জয়েন্ট ফোলা আর ব্যাথা (বিশেষ করে বাচ্চাদের), শরীর ব্যাথা, হাড় কোমড়ে ব্যাথা। মাড়ি ফুলে যাওয়া একটি বিশেষ ধরনের রক্ত ক্যান্সারের লক্ষণ। এই সব কিছুই অন্য অনেক রোগেও হতে পারে। তাই খুব বেশি হেলাফেলা না করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করা উচিৎ।
রোগ নির্ণয় এর জন্য রক্তের বেশ কিছু পরীক্ষা, বোন ম্যারো পরীক্ষা, ট্রিফাইন বায়োপ্সি, লিম্ফনোড বায়োপ্সি, কিছু সুক্ষ্ণ পরীক্ষা যেমন ফ্লো সাইটোমেট্রি, ইমিউন হিস্টোকেমিস্ট্রি আর ডিএনএ এনালাইসিস বা সাইটোজেনেটিক্স এসব পরীক্ষা করতে হয়। এখন আমাদের দেশেই নিয়মিত এই সব পরীক্ষা হচ্ছে। বেশি প্রয়োজন হলে স্যাম্পল বিদেশে পাঠানো যায়। বর্তমানে চট্টগ্রামেই উন্নত বিশ্বের মত সম্পূর্ণ ব্যথামুক্তভাবে এসব পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ক্রনিক ক্যান্সারগুলো সম্পুর্ণ নিরাময়যোগ্য। রোগীর বয়স, শারীরিক অবস্থা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে মুখে খাওয়ার ঔষধ বা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে নিয়মিত বিরতিতে সঠিক নিয়ম মেনে রক্ত রোগ বিশেষজ্ঞগণের তত্ত্বাবধানে থাকলে ইনশা আল্লাহ অনেক ক্রনিক লিউকেমিয়ার রোগীগণ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান। যারা সম্পূর্ণ সুস্থ হন না, তারাও ইনশা আল্লাহ চিকিৎসার মাধ্যমে রোগকে দমিয়ে রাখতে পারেন।
একিউট ক্যান্সার এর কিছু সংখ্যক নিরাময় যোগ্য কেমোথেরাপী বা ঔষধ এর মাধ্যমে। কিছু সংখ্যক ঔষধ এর মাধ্যমে দমিয়ে রাখা হয়। আবার যদি রোগ ফিরে আসে অথবা প্রাথমিকভাবে যদি মনে হয় রোগ বেড়ে যাবে ঔষধ এর পরও; তাহলে পুনরায় ঔষধ নিতে হয় বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয়। আর অল্প কিছু রক্তের একিউট ক্যান্সার শুরুতেই সরাসরি ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয়। অন্য অনেক ক্যান্সারের মত রক্ত ক্যান্সারে দ্রুত অপারেশন করে সুস্থ হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ রক্ত কেটে ফেলে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই ওষুধ দিয়েই চিকিৎসা করতে হয়। মাঝে মাঝে রেডিও থেরাপী, বোন ম্যারো স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট প্রয়োজন হয়। যেসব ওষুধ রক্ত ক্যান্সারের রোগীগণকে দেওয়া হয় সেগুলো বিভিন্ন মাত্রার শক্তিশালী হয়।
অধিক শক্তিশালী ওষুধ অনেক সময় ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করার সাথে সাথে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়। রক্ত কমে যাওয়া, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, রক্তপাত হওয়া, চুল পড়ে যাওয়া, জর আসা ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু এসব সমস্যা দূর করার বা ঠেকিয়ে রাখার জন্য ও নানা চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাবহার করা হয়। যেমন রক্ত কমে গেলে লাল বা সাদা রক্ত দিতে হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে চামড়ার নিচে কিছু ইঞ্জেকশন দিতে হয়। জরের জন্য এন্টিবায়োটিক ইত্যাদি দিতে হয়। কিডনি হৃদযন্ত্র লিভারের সমস্যাসহ শরীরের পুষ্টি ও লবনের ঘাটতি মেটাতেও নানা ব্যাবস্থা নিতে হয়। প্রয়োজনে আইসিইউতে বিশেষ চিকিৎসা করতে হয়। স্বল্প মাত্রার কেমোথেরাপি সাধারণত খুব বেশি সমস্যা করে না তবে সাবধান থাকা খুব জরুরি।
বোন ম্যারো স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট একটি জটিল ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা। আমাদের দেশেই বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করছেন সম্মানিত রক্তরোগ বিশেষজ্ঞগণ। সব রক্ত ক্যান্সারে ট্রান্সপ্লান্ট দরকার হয় না। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ট্রান্সপ্লান্টই একমাত্র চিকিৎসা। রোগের প্রকৃতি, রোগীর শারীরিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা সব কিছু মাথায় রেখেই চিকিৎসা ব্যাবস্থা নিতে হয়।
মনে রাখতে হবে ট্রান্সপ্লান্ট বা কেমোথেরাপী কোনটাতেই শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলা সম্ভব নয় যে রোগীর কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া হবে না। এসব পার্শ্বপ্রতিকৃয়ার যথাযথ চিকিৎসাও আন্তর্জাতিক নিয়ম ও মান মেনে করা হয়। ক্যান্সার কোষ শরীরকে খুব দ্রুত গ্রাস করে ফেলবে যদি ভয় পেয়ে চিকিৎসা না করা হয়। সব ঠিক থাকলে কেমোথেরাপী বা ট্রান্সপ্লান্টই হল সুস্থ হওয়ার পথ। তাই এর কোন বিকল্প এখন পর্যন্ত নেই। রোগীর রোগ সারতে খুব অসুবিধা হয় যখন অনেকেই চিকিৎসার সিদ্ধান্ত দিতে অনেক দেরি করেন। এর ফলে রোগীর অনেক ক্ষতি হয়।
ক্যান্সার হল দেহের ভিতর একটি অস্বাভাবিক কোষ যা খুব দ্রুত তার মতই আরও অনেক অস্বাভাবিক কোষ জন্ম দিচ্ছে। সেই নতুন কোষগুলোও আরও লাখ লাখ অস্বাভাবিক কোষ জন্ম দিচ্ছে। এই কোষগুলো বিভিন্ন অংগে ছড়িয়ে পড়ে জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এর মধ্যেই হঠাৎ কিছু ক্যান্সার কোষ হয়ে যায় কেমো বা ঔষধ প্রতিরোধি। তারা জন্ম দেয় আরও ঔষধ প্রতিরোধি কোষ। তখন শরীরে আর ঔষধ কাজ করতে চায় না। রোগ ছড়িয়ে গিয়ে চিকিৎসা আরও কঠিন হয়ে যায়। এ কারণেই রোগ বেশি ছড়িয়ে পড়া বা সেই ঔষধ প্রতিরোধি রক্ত ক্যান্সার কোষ জন্ম নিয়ে বংশবৃদ্ধির আগেই দ্রুত চিকিৎসা নিয়ে ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করে ফেলতে পারলে রোগ ভাল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এই জন্যই রক্ত ক্যান্সার বা যে কোন ক্যান্সারেই দ্রুত চিকিৎসা শুরু করাটা খুব জরুরি। প্রতিটি দিন নয়, প্রতিটি মিনিটই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রধান বাঁধা হল অর্থনৈতিক। রোগ নির্ণয়ের টেস্ট আর কেমোথেরাপির ঔষধ খুব দামী। রোগীর জর আসলে দামী এন্টিবায়োটিক, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দামী ইঞ্জেকশন, রক্তের খরচ, হাস্পাতালে থাকা খাওয়া এসবের পিছনে অনেক টাকা খরচ হয়। অনেক সময় সাময়িক ভাবে আইসিইউ যেতে হতে পারে (সবার নয়)।
আরেকটি সমস্যা হল চিকিৎসা শুরু করতে দেরি। দরিদ্র মানুষের দেরির কারণ প্রধানত আর্থিক সমস্যা। কিন্তু যারা সামর্থ্যবান এমনকি দরিদ্রদের মধ্যেও অনেকেই বিভিন্ন মানুষ; যারা সম্মানিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নন তাদের সাথে পরামর্শ করেন। মজার ব্যাপার হল আমি নিজে ছয় বছর তুমুল পড়াশোনা করে এমবিবিএস পাস ডাক্তার হয়েছি। কিন্তু এমবিবিএস এর পর বিএসএমএমইউ বা প্রাক্তন পিজি হাসপাতালে রক্তরোগ বিভাগে আরও পাঁচ বছরের পড়া শোনা শুরুর আগে রক্ত ক্যান্সারের বিশাল জ্ঞ্যানের জগৎ নিয়ে তেমন কিছুই জানতাম না। কিন্তু আমাদের রোগীদের বিশাল একটা অংশই পাত্র পাত্রী দেখার মত করে রোগ- চিকিৎসা- কোন হাসপাতাল -কোন ওষুধ বেশি ভাল ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নানা মুনির নানা মত নিতে থাকেন। ওনারা নানান বিষয়ে বিজ্ঞ হলেও বোধগম্য কারণেই ক্যান্সার চিকিৎসারর ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। দু’একবার নিজের কোন রোগীর চিকিৎসা করানো কারও মতামত আর শত হাজার রোগীর চিকিৎসা করা সম্মানিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণের মতামতের মধ্যে কোনটির গুরুত্ব বেশি তা অনেক শিক্ষিত মানুষও বুঝতে পারেন না। আর এদিকে দেরি করতে করতে রোগ বেড়ে আয়ত্তের বাইরে চলে যায়।
আরেকটি সমস্যা হল দীর্ঘ সময় ব্যাপি চিকিৎসা। রোগের প্রকৃতি ভেদে বিভিন্ন সাইকেলে বিভিন্ন ওষুধ মাস পেরিয়ে বছর বছর নিতে হয়। লম্বা সময় ধরে দামি ওষুধ, সংশ্লিষ্ট ল্যাব টেস্ট, সম্মানিত বিশেষজ্ঞগণের সাথে সিরিয়াল নিয়ে যোগাযোগ করা ধৈর্যের এক কঠিন পরীক্ষা। তবে আশাপ্রদ বাস্তবতা হল প্রায় সব ক্যান্সারেরই বিশেষ করে সব ধরনের রক্ত ক্যান্সারের চিকিৎসা বাংলাদেশে এমনকি চট্টগ্রামেই হয়। বাংলাদেশের সম্মানিত ডাক্তারগণ অনেকেই বিদেশে কাজ করেছেন, ট্রেনিং করেছেন, দেশে কাজ করে বিদেশে সম্মানিত হচ্ছেন। অনেকেই দেশের মায়ায় বিদেশ যাওয়ার লোভনীয় অফার বাদ দিয়েছেন। কিন্তু দেশের লাখ লাখ মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে বিদেশে বিভিন্ন গবেষণায়, সেমিনারে, ক্যান্সার চিকিৎসা ফোরামে সমাদৃত হচ্ছেন। এ অবস্থায় ব্যায়বহুল ও দীর্ঘ সময় নিয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা দেশে নিলে অন্তত বিদেশে আসা যাওয়া থাকা খাওয়ার বিশাল খরচ, কালচারাল সোশাল নানা সমস্যা, পাসপোর্ট ভিসা বা টাকা পাঠানোর জটিলতা, বাড়তি খরচ এসব থেকে মুক্ত থাকা যায়। বিদেশের সব চিকিৎসাই মান সম্পন্ন আর বিদেশের ডাক্তার মানেই ফেরেশতা এসব খুব ভুল ধারণা যা অনেক রোগীর অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বুঝতে পারি।অনেক রোগীই নানা মানুষের কথায় জায়গা জমি বিক্রি করে বিদেশ যান। ওখানে কিছুদিন চিকিৎসা করে অর্থাভাবে দেশে ফিরে আসেন। অথচ দেশে থাকলে চিকিৎসা খরচের বাইরে আনুষঙ্গিক খরচটাও চিকিৎসার কাজে লাগানো যেত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেশে চিকিৎসার খরচও বিদেশ থেকে কম হয়। বাস্তবতা হল পৃথিবীর সব দেশেই রক্ত ক্যান্সারের চিকিৎসা একই। কেমোথেরাপি বা ট্রান্সপ্লান্ট। এর বাইরে খুব বেশি কিছু নেই।
বিদেশি নাগরিকগণ তাদের দেশে প্রায় সব রোগের চিকিৎসা ফ্রি পান। আমাদের দেশে জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর মানুষ খুব কম। সম্মানিত চিকিৎসকগণ, মেডিকেল ছাত্র বা ইন্টার্নদের সব সময় দেখেছি অর্থ, নিজ দেহের রক্ত, দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, আর দিন রাত্রি পড়া আর ট্রেনিং এর কষ্টলব্ধ জ্ঞ্যান ও ডিগ্রী নিয়ে এসব রোগীর পাশে দাঁড়াতে। কিন্তু রাষ্ট্র যন্ত্র আর সমাজের কোটি কোটি টাকার মানুষগুলো কেমন যেন ক্যান্সার রোগীদের জন্য সুন্দর কাঠামোবদ্ধ কিছু করার ব্যাপারে একেবারেই নির্বিকার। সাধারণ মানুষও ক্রিকেট নিয়ে যত চিন্তিত সুস্থভাবে বেঁচে থাকা নিয়ে ততটা নয়। ফলাফল সরুপ কঠিন রোগ হলে কিছু অসহায় মানুষ আর তাঁদের পরিবার যেন বর্ণনাতিত এক অবস্থার শিকার হন।
পৃথিবীর সব দেশেই ক্যান্সার নিয়ে যুদ্ধ চলছে। আমাদের দেশও এর বাইরে নয়। এ যুদ্ধে জিততে হলে গোটা সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে এ যুদ্ধে রোগীর যেমন বিশাল একটি সহযোগিতা দরকার হয় তেমন সহযোগিতা দরকার হয় সম্মানিত চিকিৎসকগণেরও। আপনি প্রস্তুততো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে? এগিয়ে আসুন। আপনার দুটি সঠিক কথা, সহমর্মিতা, অর্থনৈতিক সাহায্য, অনেক দুআ আর অবশ্যই হুজুগে ভুল পরামর্শ বা অবাস্তব সমালোচনা থেকে দূরে থাকা রোগী, তাঁর পরিবার আর সমাজকে কঠিন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে অনেক দূর এগিয়ে দেবে। আপনার শহরের জন্য এগিয়ে আসুন। এগিয়ে আসুন আপনার দেশের জন্য।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ