• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

নাক ডাকা হতে পারে হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের কারণ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা অনেক সময় হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে। নাক ডাকা একটি মারাত্মক সমস্যা। বর্তমানে অনেককেই এ সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়।

অনেকে নাক ডাকাকে সমস্যা মনে না করে গভীর ঘুমের লক্ষণ বলে মনে করেন। বাস্তবিক অর্থে এটি প্রশান্তিময় ও তৃপ্তিদায়ক ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোসহ নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

মধ্যবয়স্ক পুরুষদের ৪০ ভাগ এবং নারীদের ২০ ভাগ কোনো না কোনো সময় ঘুমের এ সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি শিশুদেরও অনেক সময় ঘুমের মধ্যে নাক ডাকতে দেখা গেছে।

যিনি ঘুমের মধ্যে নাক ডাকেন তিনি তা টের পান না। কিন্তু তার পাশে যিনি থাকেন তিনি বিরক্ত বোধ  করেন। ফলে অনেক সময় বৈবাহিক সম্পর্কে ফাটল পর্যন্ত ধরে। ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিপথে কোনো বাধা পেলে বাতাস শ্বাসযন্ত্রে কাঁপুনির সৃষ্টি করে। ফলে নাক ডাকার শব্দ হয়। নাকে পলিপ থাকলে বা সাইনাসের সমস্যা থাকলে নাক ডাকা শুরু হতে পারে। ওজন বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে গলার চারপাশের চর্বি জমা এবং শিশুদের নাকের পেছনে মাংস বৃদ্ধি পেলে এটি হতে পারে।

এ ছাড়া বয়সের সঙ্গে নাক ডাকার সম্পর্ক আছে। বয়স বাড়লে কণ্ঠনালি সরু হতে থাকে। ফলে নাক ডাকা শুরু হয়। লম্বা টান টান হয়ে শুলেও অনেকে নাক ডাকেন। গলার কাছে পেশিগুলো টেনে থাকে না। আলগা হয়ে যায়। ফলে গলা থেকে নিশ্বাস বের হতে অসুবিধা হয়। গলার পেশির নমনীয়তা কমে গেলেও এই সমস্যা হতে পারে। ধূমপান ও অ্যালকোহল এই সমস্যা বাড়ায়। থাইরয়েডের সমস্যা ও গ্রোথ হরমোনের আধিক্যজনিত রোগে এবং জন্মগত কারণেও শ্বাসযন্ত্র সরু হলে বা চোয়ালে কোনো সমস্যা থাকলে নাক ডাকা হতে পারে।

ঘুমের ঘোরে নাক ডাকা রোগীদের সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম উত্তেজিত থাকে। ফলে সিস্টোলিক ব্লাড প্রেসার বেশি থাকে যা পরবর্তীতে স্থায়ী উচ্চরক্ত চাপে পরিণত হতে পারে। নাক ডাকা রোগীদের হার্ট অ্যাটাক বেশি হয়। হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি বেশি হয়। এমনকি ঘুমের মধ্যে হঠাৎ মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

নাক ডাকা রোগীদের হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হতে পারে। হার্টের অলিন্দ বড় হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া অলিন্দ শক্ত হয়ে যেতে পারে। নাক ডাকা রোগীদের ডায়াবেটিস এবং স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যারা নাক ডাকেন, তারা চিৎ হয়ে না ঘুমিয়ে কাত হয়ে ঘুমাতে পারেন। চিৎ হয়ে ঘুমালে গলার পেশি শিথিল থাকে। ফলে নাক বেশি ডাকার আশঙ্কা থাকে। ওজন কমালেও অনেক সময় নাক ডাকা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। অ্যালকোহল ও নেশাজাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে। মাথার নিচে কয়েকটি বালিশ দিয়েও নাক ডাকা কমানো যেতে পারে। মাথার নিচে বালিশ দিলে বুকের চেয়ে মাথা বেশি উঁচুতে থাকে। এতে করে নাক ডাকার আশঙ্কা কিছুটা কমে যায়।

ব্যায়াম করলে পেশি, রক্তের চলাচল ও হৃদযন্ত্রের স্পন্দন বাড়ে। ফলে ঘুমও ভালো হয়। এ কারণে নাক ডাকা কমাতে হলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট শরীরচর্চার অভ্যাস করা জরুরি। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। এতে করে নাক ডাকাও কমবে। তবে শুরুতেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন, চিকিৎসা নিন, ভালো থাকুন।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ