• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

মেয়র আসতেই মালামাল ফেলে দোকানিরা উধাও

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৩ মে ২০১৯  

প্লাস্টিকের পর্দা দিয়ে হঠাৎ উধাও বাজারের বেশিরভাগ মুদি দোকানি। লাখ লাখ টাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য একরকম ‘আল্লহর নামে’ ফেলে চলে গেছেন তারা। দোকানে উঁকি মেরে পাওয়া গেলো না কাউকে, ডেকেও মিললো না সাড়া।

সোমবার (১৩ মে) রাজধানীর উত্তরায় বিডিআর কাঁচাবাজারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ঝটিকা অভিযানে গেলে বাজারের চিত্র এভাবে পাল্টে যায়।

বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের এ বাজারটিতে মেয়রের নেতৃত্বে প্রবেশ করে ডিএনসিসির বাজার পরিদর্শন দল। মাছ ও মাংসের দোকানগুলো পেরিয়ে মুদি দোকানের দিকে যেতেই বন্ধ পাওয়া যায় বেশিরভাগ দোকান। দু’একটি দোকান ছাড়া বাকি দোকানগুলোর দোকানিরা যেন ভোজবাজির মতো একসঙ্গে গায়েব হয়ে গেছেন। এমনকি পর্দাগুলো রশি দিয়ে বাঁধারও সময় পাননি দোকানিরা।  
 
কিছু দোকানের পর্দা সরিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজ, আলু, বিভিন্ন ধরনের মসলা, সেমাই, খেজুরসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পড়ে আছে সেখানে। দোকানের অবস্থা দেখলেই পরিষ্কার বোঝা যায়, বাজার অভিযানের দল থেকে বাঁচতে দোকানিরা যে যেভাবে ছিল সেভাবেই দোকান ফেলে চলে গেছে। এসময় বেশিরভাগ দোকানেই দেখা যায়, কোনো ধরনের লেবেল ছাড়াই বিক্রির জন্য মজুদ রাখা হয়েছে সেমাই, বাদাম, খেজুর, গুঁড়া মসলাসহ বিভিন্ন ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। এসময় অন্তত তিনটি দোকান সিলগালা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।
  
বাজার পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে প্রায়ই আমরা এভাবে ঝটিকা অভিযানে বের হচ্ছি। আজ বাজারের অবস্থা দেখলাম তাতে আমরা বেশ সন্তুষ্ট। তবে কিছু কিছু ব্যবসায়ী নিয়ম মানছেন না। আমরা সেসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি।
 
বাজার অভিযান দলের উপস্থিতি আর অনুপস্থিতির মধ্যে পণ্যের দামের হেরফের বিষয়টি স্বীকার করে আতিকুল ইসলাম বলেন, কিছু দোকানে কাঁচামরিচের দাম ৬০ টাকা; কোথাও ৮০ টাকা। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত জানিয়েছি যে কাঁচামরিচ ৪২ টাকায় বিক্রি হবে। আমরা থাকলে এক ধরনের দাম, না থাকলে আরেক ধরনের দাম। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে, আমরা যে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছি তার বাইরে কেউ পণ্যের দাম বাড়াতে পারবে না। এমনটা যারা করছেন তাদের আমরা ফাইন (জরিমানা) করছি। 

‘ইতোমধ্যে তিনটি দোকান সিলগালা করেছি এবং কয়েকজন ব্যবসায়ীকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। একটি দোকানে লেবেলছাড়া ঘি বিক্রির জন্য ৫০ হাজার টাকা, আরেকটিতে লেবেলছাড়া খেজুর বিক্রির অপরাধে ২৫ হাজার টাকা এবং কাঁচামরিচের দোকানিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে আমাদের দেখে দোকানিরা পালিয়ে যাচ্ছেন।
 
কর্তৃপক্ষের বারবার নির্দেশ ও অনুরোধের পরেও ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বেশি নিচ্ছেন- এমন সত্যতা সরেজমিনে পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন ডিএনসিসি মেয়র। এরজন্য ক্রেতা সাধারণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। কোনো বাজারে কোনো ব্যবসায়ী নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে তা সিটি করপোরেশনকে জানানোর আহ্বান জানান তিনি।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ