• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতাল পতিত ৫ একর জমি ভরে উঠছে সবজিতে

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২২  

গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রের্নিং ইনস্টিটিউটের পতিত ৫ একর জমি ভরে উঠছে সবজি ও ফলে। প্রতিষ্ঠনটি চোখের চিকিৎসায় দেশের বিশাল জনগোষ্ঠিীর ভরসার স্থলে পরিনণ হয়েছে। এখন এই প্রতিষ্ঠানটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সবজি উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। এক ইঞ্চি জায়গাও ফাকা না রেখে ওই হাসপাতালের ৫ একর পতিত জমিতে সবজি, ফল ও ফুলের আবাদ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। মানব  দেহের জন্য নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি ও ফল উৎপাদন করে হাসাপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পুষ্টির চাহিদা পুরণ করা হবে। হাসপাতালের পতিত জমি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে কলা বাগান সৃজন করা হয়েছে। এছাড়া, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শিম,বেগুন, সরিষাসহ বিভিন্ন ফল ও সবজির  আবাদ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সেখানে আবাদ করা হচ্ছে ফুলকপি,বাঁধাকপি, গোল কপি,মূলাসহ শীতের বাহারী সবজি। হাসপাতালের সামনের ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত জমিতে হাসপাতাল  কর্তৃপক্ষ ফুল ও পরিবেশ বান্ধব নিম, হরিতকি,বহেরা, অর্জুণ তুলশী সহ ওষুধি বৃক্ষের চারা রোপণ করেছে।

হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জায়গাও ফাকা না রেখে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির আহবান জানিয়েছেন। আমরা এ আহবানে সাড়া দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের হাসাপাতালে মোট ১৫ একর জমি রয়েছে। এরমধ্যে স্থাপনা ও যাতায়াতের রাস্তা করা হয়েছে প্রায় ১০ একর জায়গা জুড়ে। পতিত রয়েছে ৫ একর জমি। এসব জমির আগাছা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। এখানে প্রথম কলাবাগান সৃজন করা হয়েছে। এরপর লাউ, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, শিম ও সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এখন কপি সহ শীতের সবজির আবাদ চলছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে  ক্যাম্পাস সবজি,ফল ও ফুলে সুশোভিত হয়ে উঠবে। এ সবজি ও ফল আমরা খাব। এখান থেকে আমাদের হাসপাতালে কর্মরত  ৪১৩ জন চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীরা পুষ্টি পাবেন। তাই সবজি ফল উৎপাদানে কোন কেমিক্যাল সার বা কীটনাশক ব্যবহার করব না। সম্পূর্ণ অর্গানিক সার ও বালাইন নাশক সবজি ও ফল উৎপাদনে ব্যবহৃত হবে। মানবদেহের জন্য নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে আমরা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করব। আমাদের দেখাদেখি আরো অনেকে এ  ধরণের  চাষাবাদে উৎসাহী হবেন।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন,আমাদের হাসপাতালের সামনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের জায়গা থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত আরা ১ একর জায়গায় আমরা পরিবেশবান্ধব ওষুধি ও ফুলের চারা রোপণ করেছি। সেখানে ছোটছোট পুকুরের মত করে লাল শাপলা ও পদ্ম ফুল দিয়ে শোভাবর্ধণ করেছি। এছাড়া বাহারী ফুল, পাতাবাহার, ক্যাকটার্স দিয়ে হাসপাতালটিকে দৃষ্টিনন্দন করে সাজিয়ে তুলেছি।

বঙ্গমাতা চক্ষুহাসপাতাল সংলগ্ন ঘোনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আরিফ শেখ (৪০) বলেন, উদ্যোগটি আমার কাছে  বেশ ভাল লেগেছে। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান এ ধরণের উদ্যোগ নিলে দেশে খাদ্য সংকট হবে না। আমিও তাদের দেখাদেখি বাড়ির আঙ্গিনার ৩ শতাংশ জমিতে  নিরাপদ সবজি আবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের তমিজউদ্দিন রিজভি  (৪৫) বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির আহবানে সারা দিয়ে বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপাতালের কর্মীরা বিশাল কৃষি কাজ শুরু করেছে। তাদের এ উদ্যোগ আমাকে সবজি চাষে উৎসাহিত করছে। আমিও আমার পতিত ৫ শতাংশ জমিতে অর্গানিক পদ্ধতিতে সবজি চাষ করব।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণরে উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, বঙ্গমাতা চক্ষু হাসপতালের উদ্যোগটি চমৎকার। হাসপাতালটিকে ইতিমধ্যে সবুজে সবুজময় করে সর্জিত করা হয়েছে। এটি গোপালগঞ্জের বুকে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আমি বিশ^াস করি। আমরা চক্ষু হাসপাতাল দেখিয়ে পতিত জমিতে এভাবে চাষাবাদ  করতে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে উদ্বুদ্ধ করব। তারা উদ্বুদ্ধ হলে নিরাপদ শাক-সবজির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এতে দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পুরণ হবে। বাজারে নিরাপদ সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই আবাদকারী আয় করতে পারবেন বাড়তি অর্থ।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ