• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রখর রোদে কাজের পর “কৃষক সেডেই” শান্তি

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০২৪  

প্রচন্ড রোদ মাথায় নিয়ে সকাল থেকেই ক্ষেতে কাজ শুরু করতে হয়। তীব্র গরমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিটস্ট্রোকে মানুষ মারা  যাওয়ার খবর পাচ্ছি । তারপরও পরিবারের জীবন- জীবিকার কথা চিন্তা করে প্রচন্ড তাপদাহে কাজ করতে হয় । কারণ আমরা কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। আর এতদিন  আমাদের বিশ্রামাগারের কথা কেউ চিন্তা করেন নি । এখন সরকার কৃষক সেড নির্মাণ করে দিয়েছে । প্রখর রোদে ক্ষেত-খামারে কাজ করার পর এখানেই একটু প্রশান্তির পরশ পাই। বিশ্রাম নিয়ে ক্লান্তি দূর হয়। তারপর আবার মাঠে নামতে পারি।

কথাগুলো বলছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বালাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ভরত রায় (৫২)। শুধু তিনি একাই নয় ওই গ্রামের পূবের বিলে একটি কৃষক সেড নির্মাণ করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন অর্ধশত কৃষক। কারণ কাঠফাঁটা রোদে কাজের পর এখানেই তারা বিশ্রাম নিতে পারছেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও সহযোগিতায় পূবের বিলে দুই শতাংশ জমিতে ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে কৃষক সেড। এখানে রয়েছে একটি কক্ষ ও চারিদিকে বসার পাকা বেঞ্চ। সেই সাথে রয়েছে নামাজ আদায়ের জায়গা, টিউবওয়েল, খাবার পানি ও টয়লেট। ২৫ ফিট লম্বা ও ২৫ ফিট চওড়া কৃষক সেডটি নির্মাণ করেছেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। এই ঘরের পাকা বেঞ্চ সহ ফ্লোর দিয়ে প্রায় ১শ’ কৃষক একসাথে বিশ্রাম নিতে পারেন। এছাড়া কৃষি কাজে ব্যবহৃত কৃষি যন্ত্র কাজ শেষে সেখানে নিরাপদে রাখতে পারছেন।

বালাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সুভাষ মন্ডল বলেন, পূবের বিলে আমার দেড় বিঘা জমি আছে । এখানে প্রতিনিয়তই আমাদের কাজ করতে হয়। প্রচন্ড রোদে কাজ করতে কষ্ট হয়ে যায়। এখানে আমাদের বিশ্রামের কোন জায়গা ছিল না। সরকারের পক্ষ থেকে কৃষক সেড নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এখানে আমারা বিশ্রাম নিতে পারছি। আগে মাঠে কাজ করে ক্লান্ত হয়ে বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নিতাম। ক্ষেতে ওই দিন পূনরায় আসা হত না। এখন সেডে খাবার খেয়ে বিশ্রাম নেই। তারপর আবার ক্ষেতে কাজ করতে পারি।

ওই বিলের সবজি চাষী আতর আলী বলেন, শুধু বিশ্রাম নয়,  ঝড় বৃষ্টিতে এ সেডে আশ্রয় নিতে পারবো । এখানে প্রয়োজনীয় কৃষি যন্ত্রপাতিও রাখা সহ খাবার পানি, টিউবওয়েল ও টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে। সেডটি কৃষক বান্ধব সেডে পরিনত হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

টুঙ্গিপাড়া কৃষি অফিসার রাকিবুল ইসলাম বলেন, পুবের বিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৈত্রিক জমি রয়েছে। সেটি পরিদর্শনের পর তিনি এখানে একটি কৃষক সেড নির্মাণের নির্দেশনা দেন। পরে তাঁর সহযোগিতায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কৃষক সেড নির্মাণ করে দিয়েছে।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, কৃষকরা এখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন । তারপর ক্লান্তি দূর করে কৃষক আবার মাঠে কাজে নামছেন। এতে তাদের কর্মঘন্টা বৃদ্ধি পেয়েছে ও কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। তাই কৃষক সেড প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অনন্য উদ্যোগ।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ