• বুধবার ০৮ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

  • || ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

ডাকসু নির্বাচন: ভোটকেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি না করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ। পাশাপাশি সবাইকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানিয়েছেন টিএসসিভিত্তিক সব সংগঠন নিয়ে গড়ে ওঠা এ জোটের নেতারা।

এদিকে, শুধু ডাকসু নির্বাচন ঘিরে নয়, সবসময়ই ক্যাম্পাসে সহাবস্থানে থেকে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বৃহস্পতিবার মধুর ক্যান্টিনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ছাত্রদল নেতারা।

সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি এসএম রাকিব সিরাজী। এতে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাইফুল্লা সাদেক, ঢাকা ইউনিভার্সিটি সায়েন্স সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশা সাহা, ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম জয় প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্য সংসদের সভাপতি সানোয়ারুল হক।

লিখিত বক্তব্যে রাকিব সিরাজী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ও শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য ডাকসুকে সচল করতে হলে সবার ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। ভোটের রাজনীতির সুযোগ নিয়ে কেউ যেন শত-সহস্র শহীদের রক্তস্নাত পবিত্র এ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো রাজনৈতিক শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা না করে, সে আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র ঐতিহাসিকভাবেই আবাসিক হলগুলোতে হয়ে আসছে। এরই ধারবাহিকতায় এবারও হলে ভোটকেন্দ্র হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো আপত্তি নেই, বরং তারা এ সিদ্ধান্তকে ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে মেনে নিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন। তাই অযথা ভোটকেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক বাড়িয়ে ডাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার পাঁয়তারায় পা না দিতে সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনকে আহ্বান জানান তিনি। নির্বাচনের আচরণবিধির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো কর্মসূচি বা কর্মকাণ্ড না করার জন্য সংশ্নিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করেন তিনি।

রেজওয়ানুল হক শোভন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস-ঐতিহ্য ও স্বাধীনতা সংগ্রামে সবসময় নেতৃত্ব দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র টিএসসি। টিএসসিভিত্তিক ২২ সংগঠনকে তারা গুরুত্ব দিতে চান। কেননা ১৯৯০ সালে ডাকসু বন্ধ হওয়ার পর এ সংগঠনগুলোই সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী সব সংগঠনের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবেন তারা। এ লক্ষ্যে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্যানেল ঘোষণা করা হবে।

গোলাম রাব্বানী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আশা-ভরসার জায়গা ডাকসু। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ যেন অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে 'ম্যান্ডেট' দেবেন তা তারা মেনে নেবেন। এ সময় তিনি ভোটকেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি না করার জন্য সব ছাত্র সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানান।

স্থায়ী সহাবস্থান চায় ছাত্রদল : শুধু ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহাবস্থান নয়, সবসময়ই ক্যাম্পাসে সহাবস্থানে থেকে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। নয় বছর পর বৃহস্পতিবার দুপুরে দ্বিতীয় দিনের মতো মধুর ক্যান্টিনে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সংগঠনের নেতারা।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান সাংবাদিকদের বলেন, সবসময় ক্যাম্পাসে আসতে চান তারা। তাদের কর্মীরা যেন বিনা বাধায় হলে অবস্থান ও ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেন, সেটি চান তারা।

আগের দিন বুধবার মধুর ক্যান্টিনে এসে রাজিব বলেছিলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তারা যে সাত দফা দাবি দিয়েছেন, তা না মেনেই তফসিল ঘোষণা করায় তারা আশাহত হয়েছেন। তাই দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানান তিনি।

দাবি না মানলে নির্বাচন বয়কট করবেন কি-না জানতে চাইলে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হক বলেন, তারা প্রশাসনের ওপর আস্থা রেখে এভাবেই সামনে এগোতে চান এবং শেষ পর্যন্ত যেতে চান। তিনি বলেন, তাদের সাত দফার মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল সহাবস্থান। সেটির যাত্রা শুরু হয়েছে। প্রশাসন ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে স্থানান্তর করে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে বলে তিনি মনে করেন।

এ সময় ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচন সামনে রেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে এখন থেকে নিয়মিত মধুর ক্যান্টিনে আসবেন বলে জানান তারা।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ