• মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

  • || ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

তাবলিগ জামাতের অন্যতম উদ্দেশ্য ও মূলনীতি

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

ইসলামের মৌলিক বা মূল আকিদার অংশ হচ্ছে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা ও মহানবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর ঈমান আনা।

ঈমান আনার পরই আসে বাস্তব জীবনে ইসলামের বিধি-বিধানের প্রয়োগের বিষয়টি। আর তাবলিগ জামাতের অন্যতম উদ্দেশ্য ইসলামের মৌলিক বিষয় পালনে মানুষকে আগ্রহী করে তোলা এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নত ও নির্দেশিত আমল অনুযায়ী জীবনযাপনের গুরুত্ব অনুধাবন করানো। এ বিষয়টি সামনে রেখে ৬টি উসুল বা মূলনীতি শেখানো হয় তাবলিগ জামাতে। যে মূলনীতির ওপরই পরিচালিত হয় তাবলিগ জামাত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে থেকে সাহাবারা মেহনত করে আমল করার কারণে ওনেক গুণে গুণান্বিত হইয়াছিল, ঐ গুণের ওপর মেহনত করে আমল করতে পারলে দ্বীন ইসলামের ওপর চলা অতি সহজ।

গুণগুলো হচ্ছে, ১. কালিমা ২. নামাজ ৩. এলেম ও জিকির ৪. একরামুল মুসলিমিন ৫. সহি নিয়ত ৬. দাওয়াতে তাবলিগ।

(১) কালিমা: لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’।

অর্থাৎ: ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, হজরত মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহ পাকের প্রেরিত রাসূল’।

কালিমার উদ্দেশ্যে: আসমান জমিন এবং এতদুভয়ের মধ্যে যা কিছু রয়েছে সব আল্লাহ পাকের বানানো মাখলুক। মহান আল্লাহ নির্দেশ ব্যতীত এই মাখলুক কিছুই করতে পারে না। আর মহান আল্লাহপাক এই মাখলুক ব্যতীত সব করতে পারেন।

কালিমার উপকারিতা: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন এমনভাবে আসবে যে, সে একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলেছে আল্লাহ পাক তার ওপর দোজখের আগুন হারাম করে দেবেন’। বুখারি : ৬৪২৩

(২) নামাজ: আল্লাহ তাআলার কুদরত থেকে সরাসরি ফায়দা হাসিল করার উপায় হলো, আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের হুকুমগুলোকে মুহাম্মাদ (সা.) এর পদ্ধতিতে পুরা করা তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো নামাজ।

নামাজের উপকারিতা: আল্লাহপাক ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় নামাজ নির্লজ্জা ও অশোভনীয় কাজ থেকে বিরত রাখে’। (সূরা: আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)

(৩) এলেম ও জিকির: আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে সরাসরি ফায়দা হাসিল করার জন্য আল্লাহ পাকের হুকুমকে হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর তরিকায় পালন করার উদ্দেশ্যে এলেম হাসিল করা। অর্থাৎ এ বিষয়ে যাচাই করা যে, আল্লাহপাক বর্তমান অবস্থায় আমার কাছে কী চাইছে।

উপকারিতা: আল্লাহ বলেন, আপনার ওপর কিতাব ও জ্ঞানের বিষয় নাজিল করেছেন এবং আপনাকে এমন সব বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন যা আপনি জানতেন না, আর আপনার প্রতি অসীম অনুগ্রহ রয়েছে। (সূরা: নিসা, আয়াত: ১১৪)

(৪) একরামুল মুসলিমিন: বান্দাদের সঙ্গে সম্পর্কিত আল্লাহ পাকের হুকুমকে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর তরিকায় পালন করা এবং তাতে মুসলমানদের সম্মানের প্রতি খেয়াল রাখা।

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে বান্দা আল্লাহ পাকের জন্য কোনো মানুষকে মহব্বত করল, সে আপন মহান রবকে সম্মান করল’। (মুসনাদে আহমেদ: ২৫৯)

(৫) সহি নিয়ত: আল্লাহ তাআলার হুকুমকে একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য পালন করা।

উপকারিতা: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যখন সওয়াবের নিয়তে আপন পরিবারের ওপর খরচ করে এই খরচ করার ওপর সে সদকার সওয়াব পায়’। (বুখারি: ৫৫)

(৬) দাওয়াতে তাবলিগ: নিজের বিশ্বাস ও আমলকে সহিহ করা এবং মানুষকে সহিহ বিশ্বাস ও আমলের ওপর আনার জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) এর তরিকাকে সমস্ত দুনিয়ায় চালু করার চেষ্টা করা।

উপকারিতা: রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলা হয়েছে, ‘আপনি বলে দিন, আমার রাস্তা তো এটাই যে, আমি পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে আল্লাহ পাকের দিকে দাওয়াত দিই, এবং যারা আমার অনুসারী তারাও (আল্লাহ পাকের দিকে দাওয়াত দেন)’। সূরা: ইউসুফ, আয়াত: ১০৮)

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ