• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

শেষের দিকে পদ্মাসেতু, আরেক প্রান্তে পৌঁছাতে বাকি ১০ স্প্যান

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ৫ জুন ২০২০  

শেষের দিকে পদ্মাসেতুর স্প্যান বসানো। আর বাকি রয়েছে ১১টি স্প্যান। এর মধ্যে আগামী ১১ জুন মাওয়া-কাঠালবাড়ি নৌরুটের চ্যানেলে বসানো হবে ৩১তম স্প্যান। এ কারণে এদিন মাওয়া-কাঠালবাড়ি নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বিআইডব্লউটিএ’কে জানিয়েছে সরকারের সেতু বিভাগ। এরপর শুধু মাওয়ার মাটি স্পর্শ করতে বাকি থাকবে ১০টি স্প্যান।

সেতু বিভাগ জানায়, ৩১তম স্প্যান বসিয়ে দিয়ে জাজিরা অংশের কাজ শেষ করা হবে। এরপর মুন্সিগঞ্জের মাওয়ার দিকে প্রস্তুত থাকা বাকি ৯টি খুঁটিতে ১০টি স্প্যান বসিয়ে দিলে দৈর্ঘ্যে ৬ কিলোমিটার পেরিয়ে যাবে পদ্মাসেতু। যে ২৫ ও ২৬ নম্বর খুঁটিতে বসবে ৩১তম স্প্যান, সেগুলোর অবস্থান শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি নৌ চ্যানেলের মাঝ বরাবর। এ কারণে এ নৌরুটে সব ধরনের নৌযান বন্ধ রাখার পদক্ষেপ নিতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ অনুরোধ জানিয়েছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডাব্লিউটিএ’কে।

পদ্মাসেতুর ২০টি স্প্যানের অবস্থান শরিয়তপুর অংশে, বাকি ২০টির অবস্থান মুন্সিগঞ্জের মাওয়ার দিকে। আরেকটি স্প্যানের অবস্থান মাদারীপুর জেলায়। এর মধ্যে নদীর মধ্যে মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। দুই পাড়ে সংযোগ সড়কের সঙ্গে যুক্ত অংশ মিলিয়ে সেতুটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৯ কিলোমিটার।

পদ্মাসেতুর একজন প্রকৌশলী জানান, বাংলাদেশের এখন পযন্ত সবচেয়ে দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু সেতু ৩২টি স্প্যানের। অর্থাৎ আরও দু’টি স্প্যান বসানোর পর স্প্যানের দিক থেকে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুকে ছাড়িয়ে যাবে স্বপ্নের পদ্মাসেতু।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও পদ্মাসেতুর কাজ থেমে থাকেনি। এটি দেশবাসীকে আশান্বিত করেছে। এখন থেকে সব প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলবে। পদ্মাসেতুর কাজ আর প্রায় ১১ শতাংশ বাকি আছে বলে জানান মন্ত্রী।

পদ্মাসেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রকৌশলীরা জানান, মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যান ক্রেনে তুলে নিয়ে জাজিরায় পৌঁছাতে ৬ কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়। এভাবে গত তিন বছর ধরে স্প্যান বসানো হয়েছে। এখন জাজিরা প্রান্তে শেষ হতে চলছে স্প্যান বসানোর কাজ। শুধু বাকি ৩১তম স্প্যান বসানো, যা বর্ষা মৌসুমের আগে বসানো সম্ভব হবে। এরপরে মাওয়া প্রান্তের একেরর পর স্প্যান বসিয়ে মুন্সিগঞ্জের সঙ্গে সেতুবন্ধন হলেই শেষ হবে পদ্মাসেতুর কাজ।

মাওয়া প্রান্ত ঘুরে দেখা গেছে, মাওয়া প্রান্তে স্প্যান বসানোর জন্য খুঁটিগুলো শতভাগ প্রস্তুত। আর মাওয়ার প্রথম খুঁটি থেকে থেকে দ্বিতীয় খুঁটিতে স্প্যান বসানোর জন্য ক্রেন প্রবেশের ড্রেজিং করে নদী প্রশস্ত করা হয়েছে।

পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, পদ্মাসেতুর ৪১টি স্প্যানের ৩০টি পর্যন্ত বসানো শেষ হচ্ছে। বাকি ১১টি স্প্যানের মধ্যে ১০টি বসবে মাওয়া প্রান্তে। চলতি বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে এগুলো বসানোর কাজ শেষ হবে। একইসঙ্গে সড়কপথ সেতুর ভেতরে রেলপথের কাজও এগিয়ে চলছে।

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের জুনে পদ্মাসেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে কাজে কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। এ কারণে কাজ আরও অন্তত ছয় মাস পিছিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সে হিসাবে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর কাজ শেষ হতে পারে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মাসেতু দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক ও রেলপথে যুক্ত করবে। দেশের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে স্বপ্নের এই প্রকল্প এখন অনেকটাই বাস্তবে পরিণত হয়েছে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ