• বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

আইনজীবীর ভুলে ১৮ বছরের ভোগান্তি, ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশ

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০১৯  

মামলায় অভিযুক্ত না হয়েও পুলিশ ও আইনজীবীর ভুলে আসামি হয়ে দুইমাস কারাভোগ করাসহ ১৮ বছর পরে আদালতের নির্দেশে মামলা থেকে মুক্তি পেলেন বাবলু শেখ। একই সাথে তৎকালীন মামলার তদন্তকারী দুই কর্মকর্তা ও ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইজিপিকে নির্দেশ ও বাবলু শেখকে ক্ষতি পূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের  অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান সিদ্দিক জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন।

নাটোর জজ কোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম ও  আদালতের নথিপত্র ও বাদীর আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালের ১৫ এপ্রিল নাটোর সদর উপজেলার গাঙ্গইল গ্রামে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কাজী আবদুল মালেক বাদী হয়ে শ্রী বাবুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় ১৮/০৪/২০০১ তারিেেখ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার নম্বর ১৪। এদের মধ্যে সিংড়া উপজেলার আচল কোট গ্রামের শ্রীদেব দাসের ছেলে শ্রী বাবুকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়।

তৎকালীন নাটোর সদর থানার উপ-পরিদর্শক মমিনুল ইসলাম শ্রী বাবুকে অভিযুক্ত করে ১৫/০৫/২০০১ তারিখে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। পরবর্তীতে একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর পুনরায় শ্রী বাবুকে অভিযুক্ত করে সদর থানার উপ-পরিদর্শক হেলেনা পারভীন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামি বাবুকে গ্রেফতার না করে ইয়াকুব আলীর ছেলে বাবলু শেখকে ২০০২ সালের ৭ নভেম্বর গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এই ভুলের বিষয়টি আদালতকে অবহিত না করে ছয় দিন পর ১৩ নভেম্বর আসামির আইনজীবী বাবু পরিচয়েই বাবলু শেখের জামিন করান। পরে ওই পরিচয়েই বাবলু শেখের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন, সাক্ষ্য গ্রহণ ও আসামি পরীক্ষা করেন। যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৬ সালের ২৩ জুন মুখ্য বিচারিক হাকিম মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী আসামি বাবুর বিরুদ্ধে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। ওই দিন কাঠগড়া থেকে বাবলু শেখকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি ১৬/০৮/১৬ তারিখে আপিলের মাধ্যমে জামিনে বের হন।

এ বিষয়ে নাটোর দায়রা আদালতে আপিল করা হলে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি বিচারের জন্য পাঠানো হয়। মামরার সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে বিচারক বাবলু শেখকে মামলা থেকে মুক্তির নির্দেশ দেন। একই সাথে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোমিনুল ইসলামও এসআই হেলেনা পরভীনের সঠিকভাবে তদন্ত না করার অপরাধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের আইজিপিকে নির্দেশ প্রদান করেন।

পর্যবেক্ষণে মামলার ফরোয়ার্ডিং কর্মকর্তা তৎকালীন নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা প্রমাণিত হয়। মামলায় আরও বলা হয় বাবলু শেখের সাজা ভোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী সঠিকবাবে দায়িত্ব পালন করেননি। এ বিষয়ে সঠিক দায়িত্ব পালনের জন্য রায়ের কপি বার কাউন্সিলের সভাপতি সেক্রেটারি বরাবর পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ