রাজীবের বফর্সের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে মোদির রাফাল?
দৈনিক গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
ব্যবধান পুরো তিন দশকের। প্রথমটা কামান, দ্বিতীয়টা বিমান। প্রথমটা পতন ঘটিয়েছিল সেই সময়কার ভারত সরকারের। দ্বিতীয়টা প্রবল প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে এই সময়কার ভারত সরকারকে। বফর্সের মতো রাফালও তিন দশক পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বুকে মৃত্যুবাণের আঘাত হানবে কি? লোকসভা ভোটের মাত্র দুই-আড়াই মাস আগে এই প্রশ্নটাই বড় হয়ে উঠেছে। বফর্সের মতো রাফালও যদি সরকার পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে মানতেই হবে, ইতিহাস বারবার ফিরে ফিরে আসে।
বফর্সের সঙ্গে রাফালের যত মিলই থাকুক, অমিলও কিন্তু কম নয়। মিল-অমিলের সেই তুল্যমূল্য বিচারের ওপরই ঝুলে রয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকারের ভাগ্য।
তিন দশক আগে ১৯৮৬ সালে রাজীব গান্ধীর সরকার সুইডেনের এ বি বফর্সের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ১৫৫ মিলিমিটার ব্যাসার্ধের অত্যাধুনিক হাউইৎজার কামান কিনতে। ঠিক হয় ৪১০টা কামান কেনা হবে। খরচ পড়বে প্রায় দেড় হাজার কোটি রুপি। পরের বছর, ১৯৮৭ সালে সুইডিশ রেডিও এক খবরে জানায়, ভারতকে ওই কামান বেচতে এ বি বফর্স কোম্পানি ৬০ কোটি রুপির মতো ঘুষ দিয়েছে। কাজটা করেছেন মিডলম্যান। এ অর্থ দিয়েছেন ভারতীয় রাজনীতিক ও আমলাদের।
সেই সময় ভারতীয় সংসদে কংগ্রেসের ধারেকাছে কেউ ছিল না। ইন্দিরা হত্যার রোষের আগুনে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাওয়া বিরোধীরা নির্বিষ। ৪১২ আসন জিতে ক্ষমতায় আসা রাজীব গান্ধীর ধপধপে সাদা কুর্তায় দুর্নীতির কালির ছিটেফোঁটা দাগ নেই। অথচ সুইডিশ রেডিওর তোলা অভিযোগ কাঁপিয়ে দিল রাজীবের সরকারকে। এবং তিনি হেলে পড়লেন যখন সুইডিশ সংবাদপত্র ‘ড্যাগেন্স নাইহেটার’ দাবি করল, ঘুষের সেই টাকা মিডলম্যান মারফত পৌঁছেছে শাসক দল কংগ্রেসের কাছে।
ক্রমে ক্রমে জানা গেল সেই মিডলম্যানের নাম। ওট্টাভিও কোয়াত্রুচি ইতালির নাগরিক। রাজীব-পত্নী সোনিয়া গান্ধীর পারিবারিকভাবে পরিচিত।১৯৮৬ সালে রাজীব গান্ধীর সরকার সুইডেনের এ বি বফর্সের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ১৫৫ মিলিমিটার ব্যাসার্ধের অত্যাধুনিক হাউইৎজার কামান কিনতে।প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী অর্থমন্ত্রী করেছিলেন তাঁরই রাজ্যের (উত্তর প্রদেশ) উচ্চাভিলাষী মান্ডার সাবেক রাজা বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংকে। সিদ্ধান্তটা যে কত বড় ভুল, রাজীব তা বুঝতে পারলেন ঘরের শত্রু হিসেবে বিশ্বনাথই যখন চাবুকটা হাতে তুলে নিলেন। অর্থ থেকে প্রতিরক্ষায় সরিয়েও মান্ডারাজের হাত থেকে নিস্তার পাননি রাজীব। ১৯৮৯ সালের ভোটে সেই মান্ডারাজের হাতেই পতন ঘটে তাঁর। পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই হিরো থেকে জিরোয় নেমে আসতে হয়েছিল ‘মিস্টার ক্লিন’ রাজীবকে।
সেই প্রশ্নে যাওয়ার আগে বফর্স ও রাফালের মিলগুলো দেখা যাক। প্রথমত, দুটোই প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত চুক্তি। একটি কামান, অন্যটি যুদ্ধবিমান। দ্বিতীয়ত, ৩০ বছর আগে একার ক্ষমতায় দলকে মসনদে বসিয়েছিলেন রাজীব গান্ধী। ৩০ বছর পর সেই কৃতিত্বের অধিকারী নরেন্দ্র মোদিও। ২৮২ আসন জিতে নিজের ক্ষমতাতেই সরকার গড়ার অধিকারী হন তিনি। তৃতীয়ত, দুজনই চমৎকার ভারত গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ভোটে জিতে ক্ষমতাসীন। চতুর্থত, দুই নেতাকেই মুখোমুখি হতে হয়েছে দুর্নীতির অভিযোগের। বফর্সের দুর্নীতির অভিযোগ ছিল দালালির, যা থেকে লাভবান নাকি কংগ্রেস, রাফালের ক্ষেত্রে অভিযোগ দুর্নীতির, যার সঙ্গে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নাকি জড়িত। কারণ, তিনি আগের চুক্তি অগ্রাহ্য করে সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছামতো নতুন চুক্তি করেছেন, বেশি দাম দিয়ে কম বিমান কিনেছেন এবং তা করার মধ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন কাছের শিল্পপতি অনিল আম্বানিকে, যিনি ডুবে রয়েছেন আকণ্ঠ দেনায়। পঞ্চমত, রাজীবের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ঘুষ খেয়ে নিম্নমানের কামান কিনে (যা ছিল সম্পূর্ণ ভুল ও মিথ্যা প্রচার। কার্গিলের যুদ্ধ জয়ের নেপথ্য নায়ক ওই বফর্সই) দেশের সেনানীদের তিনি বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন, যা কিনা নিতান্তই দেশদ্রোহের শামিল। মোদির বিরুদ্ধেও অভিযোগ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডকে (হ্যাল) বঞ্চিত করে রাফালের সঙ্গে তিনি চুক্তিবদ্ধ হতে সাহায্য করেছেন অনিল আম্বানির সংস্থাকে। এটাও দেশদ্রোহের শামিল।ভোট যত এগোচ্ছে, রাফাল যুদ্ধবিমান বিতর্ক ততই নতুন মাত্রা পাচ্ছে।এত মিলের মধ্যে অমিলও বিস্তর। রাজীবের বিরুদ্ধে আক্রমণ হেনেছিলেন তাঁরই সরকারের ২ নম্বর স্থানে থাকা বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং। তাঁকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা একজোট হয়েছিল। মোদির বিরুদ্ধে কিন্তু আক্রমণ এসেছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের দিক থেকে। তা ছাড়া, মোদি মন্ত্রিসভার সবাই প্রধানমন্ত্রীর পাশে এককাট্টা দাঁড়িয়ে। রাজীবের বিরুদ্ধে সরাসরি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলেও মোদির বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার সরাসরি কোনো অভিযোগ নেই। রাজীবের বিরুদ্ধাচরণ করা বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে পড়েছিল দেশের সব বিরোধী দল। রাফালের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের পাশে সেভাবে কিন্তু জড়ো হয়নি অন্য বিরোধীরা। লড়াইটা প্রধানত একাই লড়তে হচ্ছে রাহুল গান্ধীর দলকে। অমিল রয়েছে আরও। ৩০ বছর আগে বিশ্বনাথ প্রতাপকে রাজীবের বিকল্প হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী শীর্ষ নেতারা। ৩০ বছর পর রাফাল বিতর্ক তুঙ্গে উঠলেও অধিকাংশ বিরোধী নেতানেত্রী রাহুলকে সর্বসম্মত নেতার আসনটা ছাড়তে রাজি নন। বরং, আঞ্চলিক রাজনীতির স্বার্থ দেখে কোনো কোনো দল মোদির কাছাকাছি থাকার সিদ্ধান্তে দৃঢ়। মস্ত অমিল অন্য এক ক্ষেত্রেও। তিন দশক আগের রাজীব গান্ধী ছিলেন এক অনিচ্ছুক রাজনীতিক। মায়ের আচমকা মৃত্যুর পর দলের হাল ধরতে যিনি বাধ্য হয়েছিলেন। তুলনায় নরেন্দ্র মোদি রাজনীতিক হিসেবে অনেক বেশি পরিপক্ব। রাজীবের মতো অ্যামেচারিশ মনোভাবের ছিটেফোঁটা তাঁর মধ্যে নেই। বফর্স বিতর্ক রাজীবকে আত্মরক্ষায় টেনে এনেছিল। তিনি যুগ্ম সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গড়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাফাল মোদিসহ গোটা দলকে আক্রমণাত্মক করে তুলেছে। জেপিসি গড়ার ধারকাছ দিয়েও তিনি হাঁটতে রাজি হননি। বরং বারবার সম্মিলিতভাবে এটা প্রমাণে ব্যগ্র যে রাহুল মিথ্যাচারী।
রাজীব গান্ধীর চ্যালেঞ্জার বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংয়ের রাজনৈতিক অতীত ছিল নিষ্কলঙ্ক। পারিবারিক বা দলগত কোনো ভালোমন্দের দায় তাঁর ওপর বর্তায়নি। কংগ্রেসকে তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন নতুন দল ও মোর্চা গঠনের মধ্য দিয়ে। নরেন্দ্র মোদির চ্যালেঞ্জার রাহুল গান্ধীর দলের অতীত কিন্তু বিতর্কমুক্ত নয়। স্বাধীনতার পর থেকে অধিকাংশ সময় তাঁর দল কংগ্রেসই এই দেশ শাসন করে এসেছে। ভালো-মন্দের দায় তারা তাই অস্বীকার করতে পারে না। তা ছাড়া, ২০১৪ সালের ভোটে একাধিক দুর্নীতি হিমালয়ের মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল। ভোটের ইস্যু হয়েছিল কমনওয়েলথ, কয়লা, টু জি। পাশাপাশি চ্যালেঞ্জার হিসেবে অলঙ্ঘনীয় ছিল নরেন্দ্র মোদির ভাবমূর্তি। রাহুল সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
পাঁচ বছর আগে নরেন্দ্র মোদি ছিলেন অজানা ও অচেনা এক রাজনৈতিক বিস্ময়। কী তিনি করতে পারেন বা পারেন না, সে বিষয়ে কারও কোনো ধারণা ছিল না। পাঁচ বছর পর আজ কিন্তু নরেন্দ্র মোদি অজ্ঞাতকুলশীল নন। চেনা ও জানা এই প্রেক্ষাপটে বফর্সের মতো রাফালও শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী হয়ে উঠে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে ভারতবাসী আজ তীর্থের কাক সেজে রয়েছে।
- মধ্যরাত থেকে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা
- ১১ বছর পর আরেক বাংলাদেশির এভারেস্ট জয়
- দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন: মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে প্রচারণা
- এসএমই মেলা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
- দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- প্রধানমন্ত্রীর থেকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার নিলেন ৭জন
- কারখানার বর্জ্য যেন নদীতে না যায়: প্রধানমন্ত্রী
- মেট্রোরেলের ভাড়ার উপর ভ্যাট আরোপ অযৌক্তিক: ওবায়দুল কাদের
- কোনো দল নয়, বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী দেশবাসী: ভোট কুশলী প্রশান্ত
- আশা জাগাচ্ছে বায়ুবিদ্যুৎ
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর ৮৫ ভাগ কাজ শেষ
- মূল্যস্ফীতি হ্রাসে ব্যাংক থেকে ঋণ কমাতে চায় সরকার
- সাত জেলায় ৩০০ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন হচ্ছে ফ্রিপ প্রকল্প
- বাংলাদেশে নতুন জলবায়ু স্মার্ট প্রাণিসম্পদ প্রকল্প চালু যুক্তরাষ্ট
- তথ্য দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩ জন মুখপাত্র নিয়োগ দেওয়া হয়েছে
- অস্বস্তি কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মোড়
- এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা উঠে যাচ্ছে
- ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা দূর ৫০০ একর খাসজমি বরাদ্দ
- আজ জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
- কর আদায়ে বহুতল ভবন নির্মাণে আগ্রহী এনবিআর
- যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
- কেএনএফ নারী শাখার প্রশিক্ষক গ্রেপ্তার
- স্মার্ট দেশ গড়ার মাধ্যমে এসডিজির অভীষ্ট অর্জন
- সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হলেই সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার: নির্বাচন কমিশনার
- মূল্যস্ফীতি হ্রাসই লক্ষ্য
- আম নিতে চায় রাশিয়া-চীন
- সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসক শেখ হাসিনা :কাদের
- ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে: শেখ হাসিন
- জনগণ ও বাস্তবতা বিবেচনায় পরিকল্পনা প্রণয়ন করুন
- গোপালগঞ্জে সেপটিক ট্যাংকে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
- টুংগীপাড়ার বাবুল শেখের অপকর্মের তথ্য ফাঁস
- সেই নারী কাউন্সিলর চামেলীকে দল থেকে বহিষ্কার
- কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি-সমঝোতা
- সম্পর্ক নতুন উচ্চতায়
সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের আমিরের - গণতন্ত্রে না ফিরলে বিলুপ্ত হবে বিএনপি: কাদের
- সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর নামে দুদকের পৃথক দুই মামলা
- চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডাবের দাম
- টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে চীনা রাষ্ট্রদূতের শ্রদ্ধা
- ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
- ঢাকার তাপমাত্রা দেখে সারা দেশের বিদ্যালয় বন্ধ করা যাবে না
- বগুড়ায় সিনেমা হলে টিকিটের সঙ্গে বিরিয়ানি ফ্রি
- আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারপতি
- বৃহস্পতিবার সারাদেশে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে
- গোপালগঞ্জের স্বামী হত্যায় স্ত্রী ও প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভাতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু
- পদ্মশ্রী পদক গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
- কোটালীপাড়ায় এক যুবককে গলা কেটে হত্যা
- ফিলিস্তিনের পক্ষে লেখায় ‘লাইক’ দেওয়ায় স্কুলশিক্ষককে চাকরিচ্যুত
- ঢাকায় কাতারের আমির
অগ্রাধিকার পাচ্ছে বাণিজ্য বিনিয়োগ ও ভূরাজনীতি - মেজাজ হারিয়ে ভক্তকে চড় মারতে গেলেন সাকিব