• বুধবার ১৫ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

  • || ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

রওশনের সিদ্ধান্তকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন জিএম কাদের

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২০  

ছেলে রাহগির আল মাহি ওরফে সাদ এরশাদ এমপিকে জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান হিসেবে বুধবার ঘোষণা দিয়েছিলেন রওশন এরশাদ। একদিন পরেই জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশনের ঘোষিত সিদ্ধান্তকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে সাদকে দলের ১১ নম্বর যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে পদায়ন করলেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

শুক্রবার সাদকে এই পদ দেন চাচা জিএম কাদের। অথচ সাদের অনেক উপরে, এমনকি দ্বিতীয় যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে গাজীপুরের নুরুল ইসলাম দীপুর নাম রেখেছেন জিএম কাদের। আর এই দীপু হচ্ছেন গাজীপুরের জনপ্রিয় নেতা ও আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আহসান উল্যাহ মাস্টার হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত বিদেশে পলাতক আসামি। যদিও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার সময় নামের ক্রম ঠিক করা হবে। জাপা চেয়ারম্যান দলের আরো ৮ জন উপদেষ্টা, ৩৭ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও সাদসহ ১৪ জন যুগ্ম মহাসচিবের নাম ঘোষণা করেন।

সিলেটের সাবেক এমপি ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে ভাইস চেয়ারম্যান করেছিলেন রওশন। আর কাদের তাকে করেছেন দ্বিতীয় যুগ্ম মহাসচিব। সাবেক এমপি মাহ্জাবিন মোরশেদ ও নুরুল ইসলাম ওমর এবং আরিফুর রহমান খানকে রওশন করেছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য। আর জিএম কাদের এ তিনজনকে ভাইস চেয়ারম্যান করেছেন। বর্তমান এমপি অধ্যাপিকা রওশন আরা মান্নানকে প্রেসিডিয়াম সদস্য ঘোষণা দেন রওশন, সেটির বদলে কাদের তাকে করেছেন উপদেষ্টা।

আর দলের দুই প্রবীন নেতা এমএ ছাত্তারকে কো-চেয়ারম্যান এবং অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খানকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। তবে শুক্রবার পর্যন্ত এ দুজনকে কোনো পদ দেননি জাপা চেয়ারম্যান কাদের। এছাড়া রওশন ঘোষিত প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর ( অব.) খালেদ আখতার, কাজী মামুন ও অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজুকেও পদায়ন করেনি দলটির চেয়ারম্যান।

জাপার একাধিক দায়িত্বশীল নেতা ইত্তেফাকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, দলে সাদের পদ নিয়ে রওশন ও কাদেরের বিপরীতমুখী অবস্থান এরশাদ পরিবারে নতুন সংকট সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি পুরনো নেতা এমএ ছাত্তার এবং এরশাদ মুক্তি আন্দালনে পুলিশের নির্যাতনের শিকার অধ্যাপক দেলোয়ারকে প্রেসিডিয়াম থেকে বাদ রাখার ঘটনাও দলে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।

যদিও জাপা চেয়ারম্যান বলছেন, দলে কাউকে পদায়ন বা পদোন্নতি দেওয়ার এখতিয়ার নেই প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশনের। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলে পদায়ন-পদোন্নতির একক ক্ষমতা শুধু চেয়ারম্যানের।

গত ২৮ ডিসেম্বর জাপার কাউন্সিলে অনুপস্থিত থাকা রওশনকে দলের ক্ষমতাহীন প্রধান পৃষ্ঠপোষক করা হয়। কাউন্সিলের পরদিন একজন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও ছয়জন কো-চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করেন জাপা চেয়ারম্যান কাদের। পরদিন আটজন অতিরিক্ত মহাসচিবের এবং একদিন পর ৩৭ জন প্রেসিডিয়াম সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তালিকায় প্রেসিডিয়ামের পুরনো সদস্যদের মধ্যে ১১ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়। এনিয়ে বাদ পড়ারা বিক্ষুব্ধ। গঠনতন্ত্র অনুা যায়ী ৪১ জনকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করা যাবে, সেই হিসাবে আরও চারজনকে প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ রয়েছে।

জিএম কাদের বুধবার ৯ জনকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মোট ২৯ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদের বাকি ২০ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আর ৪১ ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ৩৭ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। ১৬ জন যুগ্ম মহাসচিবের মধ্যে ১৪ জনের নাম ঘোষণা করেছেন জিএম কাদের। এত পদ পদবির বিষয়ে জাপার প্রবীণ নেতাদের কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, দলে এখন পদের ছড়াছড়ি, পদের ভারে জাপা হেলে পড়ছে।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ