• মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৭ ১৪৩১

  • || ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৫

দৈনিক গোপালগঞ্জ

অনেক কিছুই ঘটে যাচ্ছে আমরা জানতে পারছি না: সিরাজুল ইসলাম

দৈনিক গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৯  

বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সরকারের নীতির সমালোচনা করে বক্তারা বলেছেন, আমাদের সরকার এতটাই ব্যর্থ যে, দেশের স্বার্থের কথা বলতেও তারা ভয় পায়। সম্প্রতি প্রধানন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তার পানি আনার কথা থাকলেও উল্টো ভারতকেই পানি দিয়ে এসেছেন তিনি। ভারত তাদের স্বার্থ ভাববে এটা স্বাভাবিক, তাই বলে আমাদের স্বার্থের কথা আলোচনার টেবিলে উঠবে না? এটা পুরো জাতির জন্য লজ্জাকর।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত ‘ফেনী নদীর পানি উৎস সন্ধান ও পানি ব্যবহার বিষয়ক প্রতিবেদন’  প্রকাশ অনুষ্ঠানে দেশের বুদ্ধিজীবী ও বিশিষ্ট নাগরিকরা একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ ও ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভারত কোনো আলোচনা ছাড়াই ফেনী নদীতে ৩৬টি পাম্প বসিয়ে পানি উত্তোলন করে নিচ্ছিল, আমরা জানতাম না। এ ধরনের অনেক কিছুই ঘটে যাচ্ছে আমরা জানতে পারছি না। আবার সেই নদীর পানি দিতে চুক্তি করা হলো আমাদের স্বার্থ না দেখে। প্রধানমন্ত্রীর সফরে আরও অনেক চুক্তি হয়েছে, যেসব বিষয়ে এখনো স্পষ্ট করে জানতে পারিনি।

তিনি বলেন, সরকার উদাসীন, ভারত তার স্বার্থ দেখছে, কিন্তু সরকার আমাদের স্বার্থ দেখছে না। বুর্জোয়া শ্রেণীর শাসক দিয়ে কোনো সংকটের উত্তরণ সম্ভব নয়। এখন আমাদের স্বার্থ আদায়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করতে হবে, যার নেতৃত্ব দিতে হবে বামপন্থিদের।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি ভারত সবচেয়ে বেশি সাম্প্রদায়িক একটি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের কথা বলেছেন সব সময়, সেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, এটা দুঃখজনক।

তিনি বলেন, আজ আমাদের দেশের পেঁয়াজ নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে, এর জন্য দায়ী ভারত। তারা আমাদের পেঁয়াজ দেওয়া বন্ধ রেখে নেপালকে দিচ্ছে। আমাদের রোহিঙ্গা সমস্যার জন্য দায়ী ভারত। যতবার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রোহিঙ্গা নিয়ে আলোচনা উঠেছে, ততবারই ভারত চুপ থেকেছে অথবা বাধা তৈরি করেছে। তাহলে বিপদে-আপদে কিসের বন্ধু, এটাই কি বন্ধুত্ব?

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেলেন, আশা করলেন তিস্তার পানি আনবেন। কিন্তু পুরো জাতিকে হতাশ করে ভারতকে উল্টো ফেনী নদীর পানি দেওয়া হলো। অথচ এই ফেনী নদীর পানি তারা আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই পাম্প দিয়ে উঠিয়ে নিচ্ছিল। আবার চুক্তি করা হলো- এর মাধ্যমে ভারতকে বৈধতা দেওয়া হলো। অথচ সরকার তিস্তার বিষয়টি আলোচনার টেবিলেই ওঠাতে পারলো না, এটা লজ্জার।

বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরে পানি আনতে গিয়ে উল্টো ভারতকে পানি দিয়ে এলাম, এটা জাতির কাছে লজ্জাকর। আবার ফেনী নদীর পানি দিতে চুক্তি করার অর্থ হলো ভারতের অবৈধ পানি উত্তোলনকে বৈধতা দেওয়া। ভারত আমাদের ১৯৭১ সালে সহযোগিতা করেছে পারস্পরিক স্বার্থে। তারা চেয়েছিল পাকিস্তান আলাদা হোক আর আমরা চেয়েছিলাম উর্দু ভাষার বিদায়। তাই বলে সব দিতে হবে, এটার নাম বন্ধুত্ব নয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম বাবুল, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতা ম ইনামুল হক, এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী প্রমুখ।

দৈনিক গোপালগঞ্জ
দৈনিক গোপালগঞ্জ